ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভে উত্তাল ইসরায়েল
সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা কমিয়ে আনতে পরিকল্পনা নিয়েছে ইসরায়েলের বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকার। এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ১০ সপ্তাহ ধরে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। কয়েক লাখ ইসরায়েলি নাগরিক এতে অংশ নিয়েছে। কেউ কেউ একে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ বলে অভিহিত করছে।
বোরবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাইফার মতো শহরে রেকর্ড সংখ্যক বিক্ষোভকারী দেখা গেছে, এছাড়া তেলআবিব শহরের রাস্তায় অন্তত দুই লাখ ইসরায়েলি রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহে ইসরায়েলের পার্লামেন্টে (নেসেট) আলোচনার জন্য উত্থাপিত হতে যাওয়া বিচার বিভাগ সংস্কার বিষয়ক বিলটি স্থগিত রাখতে ও আলোচনার জন্য সময় নিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে জনতার দাবি ক্রমশ জোড়ালো হয়ে ওঠছে দেশটিতে।
বিক্ষোভ আহ্বানকারীরা বলছেন, প্রায় পাঁচ লাখ গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারী শনিবার দেশব্যাপী রাস্তায় নেমেছিলেন। এই প্রতিবাদ কর্মসূচিকে ইসরায়েলি গণমাধ্যম হারেৎজ ‘দেশের ইতিহাসে বৃহত্তম বিক্ষোভ’বলে উল্লেখ করেছে।
এদিকে সমালোচকরা বলছেন, এই সংস্কার গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। যদিও বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার বলছে, পরিকল্পিত পরিবর্তন ভোটারদের জন্য ভালো।
এছাড়াও বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার ল্যাপিড দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বেয়ের শেভাতে দেয়া এক বক্তৃতায় বলেছেন, দেশটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সংকটের’ মুখোমুখি হচ্ছে।
ল্যাপিড আরও বলেন, আমরা সন্ত্রাসের মধ্যে পড়েছি। আমাদের অর্থনীতি বিপর্যস্ত, অর্থ দেশ থেকে লোপাট হয়ে যাচ্ছে। গতকাল সৌদি আরবের সঙ্গে নতুন চুক্তিতে সই করেছে ইরান। তবে এ সরকারের একমাত্র কাজ হলো ইসরায়েলের গণতন্ত্র ধ্বংস করা।
তেল আবিবের এক বিক্ষোভকারী তামির গাইতসাব্রি বলেন, এটা কোনো বিচার বিভাগীয় সংস্কার নয়। এটি এমন একটি পরিবর্তন যা ইসরায়েলকে সম্পূর্ণ একনায়কতন্ত্রের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং আমি চাই ইসরায়েল আমার সন্তানদের জন্য গণতন্ত্র বজায় রাখুক।
প্রস্তাবিত আইন অনুসারে যে কমিটি বিচারক নির্বাচন করে সেখানে সরকারের প্রতিনিধিকে আরও বেশি ক্ষমতা দেয়া হবে এবং এর মাধ্যমে সরকার দেশের মৌলিক আইনের সংশোধনী আনতে সুপ্রিম কোর্টের যে অধিকার ছিল তা কেড়ে নেবে।
ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি বিধান আইনসভায় প্রাথমিক অনুমোদন পেয়েছে। এই সংস্কারের আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো ১২০ সদস্যের পার্লামেন্টে সুপ্রিমকোর্টের কোনো সিদ্ধান্ত বাতিল করার ক্ষেত্রে ৬১টি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটই হবে যথেষ্ট।