প্রত্নতাত্ত্বিক ড. এনামুলের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
একুশে ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক অধ্যাপক ড. এনামুল হক মারা গেছেন। রোববার রাজধানীতে নিজ বাসভবনে তিনি মারা যান বলে জানিয়েছেন ড. এনামুল হক সহকর্মী (রিসার্চ ফেলো) সাইফুল ইসলাম।
এনামুল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি ড. এনামুল হকের ছিল প্রগাঢ় ভালোবাসা এবং গভীর শ্রদ্ধাবোধ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নের সময় সাহিত্য পত্রিকা উত্তরণের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি লন্ডন এবং নিউইয়র্ক সফর করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বজনমত সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
প্রধানমন্ত্রী তার শোকবার্তায় আরও বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর প্রতিষ্ঠাসহ জাতীয় পর্যায়ে রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তী উদযাপন প্রচলনের ক্ষেত্রে তার প্রয়াস অত্যন্ত প্রশংসনীয়। প্রত্নতত্ত্বে বিশেষ অবদানের জন্য বন্ধুপ্রতীম ভারত সরকারও তাকে ২০২০ সালে পদ্মশ্রী পদক প্রদান করে।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।
এনামুল হক ১৯৩৭ সালের ১ মার্চ বগুড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। বগুড়া থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগে স্নাতক ও ইতিহাস-প্রত্নতত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
পরবর্তীতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দক্ষিণ এশিয়ার শিল্প নিয়ে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনে ১৯৬২ সালে এনামুল হক তৎকালীন ঢাকা জাদুঘরে যোগদান করে। পরবর্তীতে ১৯৬৫ সালে পদোন্নতি পেয়ে অধ্যক্ষ, ১৯৬৯ সালে পরিচালক হিসেবে কাজ করেন।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঢাকা জাদুঘরকে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে রূপান্তর করা হয় এবং এর প্রতিষ্ঠাকালীন মহাপরিচালক হিসেবে এনামুল হক যোগদান করে। জাদুঘরের উন্নতি ও আধুনিকীকরণে তার অবদান অনস্বীকার্য। মহাপরিচালক হিসেবে তিনি ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ২০১৭ সালে একুশে পদক ও ২০২০ সালে স্বাধীনতা পদক এবং ভারতের পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত হন।