‘রাজা রামমোহন কেন মাদ্রাসায় পড়তেন?’ আসামের মুখ্যমন্ত্রীকে ওয়াইসি
মাদ্রাসা নিয়ে ভারতের আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন মজলিস-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) দলের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। তিনি বলেছেন, মাদ্রাসাগুলো শাখাদের মতো নয়। এগুলো আত্মসম্মানবোধ এবং সহানুভূতির শিক্ষা দেয়। ওয়াইসি স্মরণ করিয়ে দেন- আসামের মুখ্যমন্ত্রী এমন এক সময়ে মাদ্রাসার কথা বলছেন, যখন রাজ্যটির প্রায় সাত লাখ মানুষ বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এবং ১৮ জন মারাও গেছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জিনিউজের এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার ভারতের রাজধানী দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে এক বক্তৃতায় আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, যতদিন মাদ্রাসা থাকবে ততদিন শিশুরা ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার কথা ভাবতে পারবে না।তিনি মাদ্রাসা শব্দটি বাতিলেরও দাবি জানান।তিনি বাচ্চাদের মাদ্রাসায় ভর্তি করাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গেও তুলনা করেন। তিনি বলেন, কেউতো কোরান না পড়ার কথা বলছে না। মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান, গণিত, জীববিদ্যা, উদ্ভিদবিজ্ঞান এবং প্রাণীবিজ্ঞান শেখানোর ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ২-৩ ঘণ্টা ধর্মীয় শিক্ষা দিন। কিন্তু, শিক্ষার্থীদের সেভাবেই স্কুলে পড়ানো উচিত, যাতে তারা ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে। সেটার ব্যবস্থা করুন।
আসামের মুখ্যমন্ত্রীর এমন ধরনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, “ইসলাম শিক্ষার পাশাপাশি বহু মাদ্রাসায় বিজ্ঞান, গণিত, সামাজিক বিজ্ঞান পড়ানো হয়।” তিনি দাবি করেন, যে সময় সঙ্ঘীরা
(সঙ্ঘ পরিবারের লোক) বৃটিশদের দালাল হিসেবে কাজ করতো, সে সময় বহু মাদ্রাসা দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে নিয়োজিত ছিল।
ওয়াইসি আসামের মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, “অশিক্ষিত লোকেরা এসব বুঝবে না।” তিনি প্রশ্ন রাখেন, হিন্দু সমাজ সংস্কারক রাজা রামমোহন রায় কেন মাদ্রাসায় পড়তেন? আসামের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য মুসলমানদের জন্য মানহানিকর বলে মন্তব্য করে ওয়াইসি বলেন, “মুসলিমরা ভারতকে গ্রহণ করেছে এবং সেটা তারা অব্যাহত রাখবে।”
উল্লেখ্য, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আসামের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে রাজ্যটির শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ২০২০ সালে তিনি রাজ্যটিতে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত সকল মাদ্রাসা বাতিল করে দিয়ে সেগুলোকে সাধারণ স্কুলে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
তিনি রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা বিষয়ক দুটি আইন বাতিল করার জন্য আসামের বিধানসভায় একটি আইনও পাস করেছিলেন। গুয়াহাটি হাইকোর্ট ওই আইন এবং রাজ্য সরকারের পরবর্তী আদেশকে বহাল রেখেছে।