দিনাজপুরে গোর-এ শহীদ ময়দানে ৬ লাখ মুসল্লির নামাজ
দেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে প্রায় ৬ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করলেন বলে জানান আয়োজকরা। অনেকেই বলছেন, দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত হলো এটি। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় এ ঈদের জামাত মুসল্লিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। সকাল থেকে মুসল্লিদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে গোর-এ শহীদ বড় ময়দান। প্রায় ২২ একর জায়গা নিয়ে বিস্তৃত এই ময়দানে দূর-দূরান্ত থেকে প্রায় ছয় লাখ মুসল্লি অংশ নেন।
ঈদের নামাজে অংশ নেন বিচারপতি এনায়েতুর রহিম, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ লাখো মুসল্লি। বৃহৎ ঈদ জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরে আনন্দে আপ্লুত তারা।
শুধু দিনাজপুরের মানুষই নয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা, বগুড়া, রংপুর, নীলফামারী ও জয়পুরহাটসহ আশপাশের জেলার অনেক মুসল্লি এ ঈদ জামাতে অংশ নেন বলে জানা গেছে।
এই ঈদের নামাজের ইমামতি করেছেন দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা শামসুল ইসলাম কাশেমী। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন তিনি।
ঈদের জামাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে স্থানীয় প্রশাসন। কড়া নিরাপত্তায় সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন।
এর আগে সকাল থেকে মুসল্লিরা সাইকেল, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, বাস, মিনিবাস, কার ও মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে চেপে এবং পায়ে হেঁটে ঈদগাহ মাঠে আসেন। শহরের সকল রাস্তা একমুখী হয়ে যায়। যদিও সকাল থেকে আকাশ মেঘলা ছিল। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিতে পড়তে হয় কিনা তা নিয়ে মানুষের মধ্যে শঙ্কা ছিল।
এই ঈদগাহের মিনারগুলো নান্দনিক। বলা হয়, এটি এশিয়ার সবচেয়ে উঁচু ঈদগাহ মিনার গোর-এ শহীদের। ৫২টি গম্বুজের দুই ধারে ৬০ ফুট উঁচু দুটি মিনার। মাঝের দুটি মিনার ৫০ ফুট করে এবং প্রধান মিনারের উচ্চতা ৫৫ ফুট। এসব মিনার আর গম্বুজের প্রস্থ ৫১৬ ফুট। দেশের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ ময়দানের পশ্চিমে নির্মিত হয়েছে ঈদগাহ মিনারটি। প্রত্যেকটি গম্বুজে দেওয়া হয়েছে বৈদ্যুতিক বাতির সংযোগ। যে মেহরাবে খতিব বয়ান করেন, তার উচ্চতা ৫০ ফুট। ৫২টি গম্বুজ ২০ ফুট উচ্চতায় স্থাপন করা হয়েছে। গেট দুটির উচ্চতা ৩০ ফুট করে।
ঈদের নামাজ শুরুর আগে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, জেলা প্রশাসক খালিদ মোহাম্মদ জাকী, পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন।
নামাজ শেষে উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ ঈদের এ জামাত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম। বক্তব্যে তিনি বলেন, এই ঈদের জামায়াতে এবার ৬ লাখ মুসুল্লি নামাজ আদায় করেছেন। আগামীতে আরও মুসল্লি অংশ নেবেন।