কুষ্টিয়া জেলায় সেরা এথলেট থেকে মাদক বিক্রেতা!

মো. হাসান ছিলেন একজন এথলেট। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে কুষ্টিয়া জেলায় সেরা হয়ে অংশগ্রহণ করেন বিভাগীয় পর্যায়ে। দৌড়ে খুলনা বিভাগেও সবাইকে ছাড়িয়ে যান মো. হাসান। এরপর ঢাকায় গিয়ে ট্রায়াল দিলেও জাতীয় দলে সুযোগ পাননি।

স্প্রিন্টে না পারলেও জাতীয় যুব হ্যান্ডবল দলে ঠিকই জায়গা করে নেন তিনি। খেলেন বেশকিছু ম্যাচও। ক্রীড়ায় যার এমন উজ্জ্বল পথচলা সেই ব্যক্তি অবশেষে হারিয়ে গেলেন মাদকের অন্ধকার জগতে।

মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে জাতীয় যুব হ্যান্ডবল দলের সাবেক এই খেলোয়াড়সহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ। শনিবার (১ অক্টোবর) বিকেল ৩ টার দিকে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের বড়মসজিদ পাড়ার মৃত মওলা বক্সের ছেলে মো. আবু বক্কর সিদ্দিক (৩৩), মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আসলাম (৪৭), মৃত আজিজুল হকের ছেলে মো. হাসান (৪৯) এবং শহরের দৌলতদিয়াড় পাড়ার মতলবের ছেলে তোতা মিয়া (৪৭)। গ্রেফতারের পর তাদের কাছ থেকে ৪৯ টি প্যাথেড্রিন, নগদ ৪ হাজার ৪০০ টাকা এবং একটি দা উদ্ধার করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন এ বিষয়ে বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে মাদক কারবারি বনি ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের মধ্যে হাসানও আছেন। তার বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা রয়েছে।

তিনি বলেন, বনি চুয়াডাঙ্গায় মাদকের নিজস্ব একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। তাকে এর আগেও একাধিকবার গ্রেফতারে অভিযান চালালেও সে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মসজিদ পাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকিদের গ্রেফতার করা হয়।

ওসি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের হাসান জানান ১৯৮৭ সাল-১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তিনি জাতীয় যুব হ্যান্ডবল দলে খেলেন। এরপর ভাগ্যান্বেষণে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমান। সেখানে সুবিধা করতে না পারায় দেশে ফেরেন ২০১৭ সালে। দেশে একটি মুদির দোকান দিলেও তা বন্ধ হয়ে যায় অল্প দিনেই। এরপর বন্ধুদের সঙ্গে মিলে মাদকের জগতে পা বাড়ান। প্রথমে শুধু সেবন করলেও পরে নিজেও বিক্রিতে নেমে পড়েন। যোগ দেন বনির দলে। ২০১৮ সালে একবার গ্রেফতারও হন তিনি।

ওসি মহসীন বলেন, গ্রেফতার বনির বিরুদ্ধে ছয়টি, হাসানের বিরুদ্ধে ছয়টি, আসলামের বিরুদ্ধে চারটি এবং তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা আছে। তাদের বিরুদ্ধে নতুন মাদক মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.