মিয়ানমার থেকে ভারতে আশ্রয়ের খোঁজে পালাচ্ছে সাধারণ মানুষ

ভারতের সীমান্ত লাগোয়া মিয়ানমারের অধিকাংশ জনগণই পালিয়ে যাচ্ছেন। দেশটির সেনাবাহিনী ও সামরিক শাসনের বিরোধী মিলিশিয়াদের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যেই বেশ কয়েকটি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরেই সেখানকার অধিবাসীরা বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে শুরু করেন। এছাড়া ৩০ সেনা নিহত হওয়ারও দাবি করেছেন জান্তাবিরোধী মিলিশিয়ারা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও সংবাদমাধ্যমের বরাতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। চিন রাজ্যের থান্টল্যাঙ্গে স্বাভাবিকভাবে ১০ হাজারের মতো মানুষ বসবাস করছিলেন। কিন্তু তাদের অধিকাংশই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ভারতসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় চলে গেছেন। ভারতের মিজোরামের সুশীল সমাজের একটি গ্রুপ বলছে, গেল দুসপ্তাহে দুটি জেলায় মিয়ানমার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার লোক পালিয়ে এসেছেন। সামরিক ধরপাকড় থেকে বাঁচতে তারা এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছেন।

গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সুচির সরকারকে উৎখাত করে গেল পহেলা ফেব্রুয়ারি সামরিক শাসন জারি করা হলে দেশটিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। নাগরিকেরা জান্তাবিরোধী ধর্মঘট ও বিক্ষোভের ডাক দিয়ে আসছেন। থান্টল্যাঙ্গে গত সপ্তাহের লড়াইয়ের সময় অন্তত ২০টি বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়েপড়া ছবিতে দেখা গেছে, আগুন কীভাবে লোকজনের বাড়ি গ্রাস করে নিচ্ছে।

মিয়ানমার নাউ বলছে, একটি বাড়িতে আগুন নেভাতে চেষ্টাকালে এক খ্রিস্টান যাজককে গুলি করে হত্যা করেছে সেনারা। মিয়ানমারের দ্য গ্লোবার নিউ লাইট বলছে, যাজকের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত চলছে। সেনারা অন্তত শতাধিক সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় ঘটেছে। স্থানীয় কমিউনিটি নেতা সালাই থ্যাং বলেন, এখন পর্যন্ত চার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১৫ জন। সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটি দখল করে নেওয়া হলে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।

দ্য চিন প্রতিরক্ষা বাহিনী নামের একটি মিলিশিয়া গোষ্ঠী বলছে, তাদের হামলায় এখন পর্যন্ত ৩০ সেনা নিহত হয়েছেন। তবে হতাহতের এসব দাবি স্বাধীনভাবে তদন্ত করে দেখা যায়নি। এ নিয়ে সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রের কোনো মন্তব্যও পাওয়া যায়নি। নিহত যাজকের এক স্বজন বলেন, একটি এতিমখানায় ২০টি শিশুসহ থান্টল্যাঙ্গে মাত্র কয়েকটি বাড়িঘর অবশিষ্ট আছে। বাপটিস্ট মিনিস্টারকে হত্যা ও বাড়িতে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। মিয়ানমারের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত থামাস অ্যান্ড্রুস বলেন, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিকে একটি জ্বলন্ত নরক বানিয়ে রেখেছে মিয়ানমারের জ্বান্তা বাহিনী।

সূত্র: মিয়ানমার নাও, রয়টার্স।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.