হাওরে নৌকায় নববধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৩

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার টিক্কাপুর হাওরে নৌকায় নববধূ গণধর্ষণের ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।বৃহস্পতিবার রাতে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিটিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করে ভিকটিমের পরিবার।

গত ২৫ আগস্ট নৌকায় স্বামীর সঙ্গে হাওরে ঘুরতে বেরিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন ওই নববধূ। এ সময় ধর্ষণকারীরা ওই নববধূর স্বামী ও তার বন্ধুকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। শুধু তাই নয়, গণধর্ষণের ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দিয়েছে ধর্ষণকারীরা।

বর্তমানে ওই নববধূ হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

বুধবার রাতে তার স্বামী জানান, মাসখানেক আগে পারিবারিকভাবে তিনি বিয়ে করেন। বিয়ের একদিনের মাথায় তিনি কাজের সুবাদে চলে যান ঢাকায়। কয়েক দিন আগে তিনি ফের বাড়ি ফিরেন। এরপর গত ২৫ আগস্ট দুপুরে তিনি, তার স্ত্রী ও তার বন্ধু হাওরে নৌকাভ্রমণে যান।

একপর্যায়ে মুছা মিয়া, সুজাত মিয়া, হৃদয় মিয়া, ইব্রাহিম মিয়া ও জুয়েল মিয়াসহ ৫-৬ জন যুবক নৌকাযোগে এসে তাদের নৌকার গতিরোধ করে। তারা কোনোকিছু বুঝে উঠার আগেই তাকে ও তার বন্ধুকে মারধর করে তার স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণকারীরা তার স্ত্রীকে নির্যাতনের ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করে। ঘটনাটি কাউকে না জানাতে বলে এবং বিষয়টি জানাজানি হলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তারা চলে যায়।

তিনি বলেন, বাড়িতে আসার পর বিষয়টি লোকলজ্জার ভয়ে ও ধর্ষণকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় কাউকে জানাইনি। তবুও গত কয়েক দিন ধরে মুছা মিয়া, সুজাত মিয়া, হৃদয় মিয়া, ইব্রাহিম মিয়া ও জুয়েল মিয়া ওই ভিডিওটি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে।

একপর্যায়ে ভিডিওটি এলাকায় ছড়িয়ে দেয় তারা। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। বর্তমানে ধর্ষণের শিকার নববধূ হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

লাখাই থানার ওসি মো. সাইদুর রহমান জানান, বিষয়টি শুনেছেন। নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথাও হয়েছে। তারা কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নাদিরা বেগম জানান, ধর্ষণের অভিযোগে এক নারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কিনা, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই বলা যাবে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.