‘আমাদেরকে রাস্তায় নামতে হবে, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারকে পরাজিত করতে হবে’

সরকার হটানোর আন্দোলনের জন্য আগাম প্রস্তুতির ডাক দিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশকে যদি আমরা মুক্ত করতে না পারি, আওয়ামী লীগকে যদি সরাতে না পারি, আমরা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারব না। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও মুক্ত করতে পারব না। আমরা হাজার হাজার মানুষ যে মিথ্যা মামলা নিয়ে বসে আছি আমরাও মুক্ত হতে পারব না।

আজ বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীদের প্রতি বিএনপি মহাসচিব এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আমাদেরকে রাস্তায় নামতে হবে, রাস্তায় নেমে আসতে হবে। সোচ্চার হতে হবে এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ সরকার তাদের পরাজিত করতে হবে। তাদের বাধ্য করতে হবে যে নির্বাচনকালীন একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনেরে পরিচালনায় দেশে একটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়ার মধ্য দিয়ে জনগণ ভোট দিয়ে তার প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করবে, সরকার গঠন করবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে। আমরা ১০/১২ বছর ধরে সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি। আমাদের ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে, আমাদের ৫০০ বেশি ভাই গুম হয়ে গেছে। আমাদের হাজারের ওপর মানুষ খুন হয়ে গেছে। আমাদের অনেককে হাঁটুতে গুলি করে পঙ্গু করে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আন্দোলন ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প নেই। একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবার জন্য, আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবার জন্য আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে। বিশেষ করে তরুণ-যুবক যারা আছেন তাদেরকে জেগে উঠতে হবে। পরিবর্তনে আসে সব সময় তরুণদের মাধ্যমে, তাদের নেতৃত্বে, তাদের বীরত্ব ও তাদের সাহসিকতার মধ্য দিয়ে। এখন কাজ করতে হবে তরুণ-যুবকদের।

অপহরণের সাথে জড়িত থাকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, পত্রিকায় দেখবেন দিনাজপুরে একজন এএসপিসহ পাঁচজন পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হয়েছে। কেন? অপহরণ করার দায়ে। যাবে কোথায় মানুষ। পুলিশের অফিসাররা যদি অপহরণ করে, ৫০ লাখ টাকা চায় দেশের মানুষ যাবে কার কাছে?

তিনি বলেন, এই সরকার সব ক্ষেত্রে দলীয়করণ করেছে। যেটাকে আমি বলে তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। আজকে এই অনুষ্ঠানে অনেক সাংবাদিক ভাইয়েরা এসেছেন, অনেক ক্যামেরা। নিজেরা কিছু লিখতে পারবেন না, সাহস করে লেখার শক্তি নাই। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ বিভিন্ন আইন দিয়ে গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। এটা কোনোভাবে একটা গণতান্ত্রিক দেশ হতে পারে না, এটা সম্পূর্ণভাবে একটা কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী দেশে পরিণত হয়েছে। এখন আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে।

করোনার শুরু থেকে বিএনপি জনগনের পাশে রয়েছে উল্লেখ মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি প্রথম দিকে সেই সময়েও জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে প্রায় ৪ কোটি মানুষের কাছে সাহায্য-সহযোগিতা পৌঁছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। বিএনপি একমাত্র দল যে দল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও খিলগাঁও থানা সভাপতি ইউনুস মৃধার পরিচালনায় আলোচনাসভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিব, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু, অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে ইউসুফ বিন জলিল কালু, আবদুল মানায়েম মুন্না, মাসুদ আহমেদ মিলন, গোলাম হোসেন, জামিলুর রহমান নয়ন, মাহবুবুল আলম বাদল, এনামুল হক এনাম, আল-আমীন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.