পাবনায় স্কুলছাত্র হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও আসামি গ্রেপ্তার
পাবনার চাটমোহরে চাঞ্চল্যকর সিএনজিচালক স্কুলছাত্র ইমন হত্যার রহস্য ১৮ ঘণ্টায় উদঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যার ঘটনায় জড়িত সকল আসামিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের চিনাভাতকুর গ্রামের রওশন আলীর ছেলে রাকিবুল (১৯), শামসুল মন্ডলের ছেলে নুরুজ্জামান (২৫), রোস্তম আলীর ছেলে জেলিম হোসেন (১৮), রবিউল করিমের ছেলে হৃদয় হোসেন (১৮) ও মির্জাপুর গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে টুটুল হোসেন (১৬)।
নিহত স্কুলছাত্র ইমন হাসান (১৬) চাটমোহর উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের মাঝগ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে ও স্থানীয় আশরাফ জিন্দানী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের জবানবন্দি থেকে জানা গেছে, আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে সিএনজি অটোরিকশা চুরি করার লক্ষ্যে কৌশলে ভিকটিমের সিএনজি ভাড়া করে ঘটনাস্থলে এনে হত্যা করে।
পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান (বিপিএম) আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় চাটমোহর থানায় এক প্রেস ব্রিফিং করে এ কথা জানান। পুলিশ সুপার বলেন, গত ১৯ আগস্ট ইমন হাসানের পিতা জাকির হোসেন চাটমোহর থানায় অভিযোগ করে জানান, তার ছেলে সিএনজি নিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার মান্নাননগর যাবার পর আর তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সে মান্নাননগর থেকে চারজন লোকের একটি ভাড়া নিয়ে চাটমোহরের বওশা ব্রিজের উদ্দেশে রওনা দেয়।
গত ২০ আগস্ট সকাল ১১টায় স্থানীয় লোকজন থানায় ফোন করে জানান, চাটমোহর থানার হান্ডিয়াল দরাপপুর ভাঙ্গা ব্রিজের অদূরে একটি লাশ পানিতে পড়ে আছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করলে জাকির হোসেন তার ছেলের লাশ শনাক্ত করেন। পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের আরো জানান, ঘটনার বিষয় জানার পর পুলিশ সুপারের দিক-নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও ডিএসবি), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) ও সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) ঘটনাস্থল ও মান্নাননগর পরিদর্শন করেন। সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারেন চারজন যাত্রীর একজনের বাড়ি চাটমোহরের বওশা ব্রিজের আশপাশে।
এরপরই সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম, সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরীন ও চাটমোহর থানার ওসি মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল উল্লাপাড়া থেকে সিএনজি উদ্ধার করেন এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করেন। গত ২১ ও ২৫ আগস্ট গ্রেপ্তারকৃত নুরুজ্জামান, হৃদয়, সেলিম ও রাকিবুলকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, অর্থ উপার্জন করার জন্যই আসামিরা সিএনজি চুরি বা ছিনতাই করেছিল। যারা সিএনজি কিনেছিল, তারা সেটি উল্লাপাড়া থানায় জমা দেয়। তারা এখন পলাতক রয়েছে। মাত্র ১৮ ঘণ্টায় হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামিদের গ্রেপ্তার পুলিশের সাফল্য বলে জানান পুলিশ সুপার।
প্রেস ব্রিফিংয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরীন, চাটমোহর থানার ওসি মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, পরিদর্শক (তদন্ত) হাসান বাশীর, হান্ডিয়াল পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ নুরুজ্জামানসহ থানার অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ছাড়াও নিহত ইমন হাসানের পিতা জাকির হোসেন, মা, দাদা ও স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।