নায়করাজ রাজ্জাকের চলে যাওয়ার চার বছর আজ

কিংবদন্তি নায়করাজ রাজ্জাকের চলে যাওয়ার চার বছর আজ। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সন্ধ্যায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন নায়করাজ। ফুসফুসের অসুখসহ বার্ধক্যজনিত রোগে দীর্ঘদিন ভুগছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গনে যে শূণ্যতা তৈরি হয়েছে তা কখনো পূরণ হওয়ার নয়।

১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের দক্ষিণ কলকাতার একটি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন নায়ক রাজ্জাক। সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন। সেই থেকে শুরু তার অভিনয় জীবন। ষাটের দশকে নির্মাতা সালাউদ্দিনের ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় একটি পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে প্রবেশ করেন নায়করাজ। যদিও এর আগেই চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছিল এই অভিনেতার। যুক্ত থিয়েটারের সঙ্গে।

নায়ক হওয়ার অদম্য স্বপ্ন নিয়ে ১৯৫৯ সালে ভারতের মুম্বাইয়ের ফিল্মালয়তে সিনেমার ওপর পড়াশুনা ও ডিপ্লোমা গ্রহণ করেন রাজ্জাক। এরপর কলকাতায় ফিরে ‘শিলালিপি’ ও আরো একটি সিনেমায় অভিনয় করেন। ১৯৬৪ সালে কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে রাজ্জাক তার পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকায় এসে কাজ করেন একজন সহকারী পরিচালক হিসেবে। ‘উজালা’ সিনেমায় পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারী হিসেবে কাজ করেন তিনি। এরপর পরিচালক সালাউদ্দিনের সিনেমায় অভিনয়ের কিছুদিন পরেই নির্মাতা জহির রায়হান তার ‘বেহুলা’তে রাজ্জাককে লখিন্দরের ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ করে দেন। এর মধ্য দিয়েই নায়ক হিসেবে রাজ্জাকের প্রথম পরিচয়। তারপর একের পর এক সিনেমায় তার অভিনয়ে মুগ্ধ হন এ দেশের সিনেমা দর্শক।

রাজ্জাক অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘ময়নামতি’, ‘মধু মিলন’, ‘পিচ ঢালা পথ’, ‘যে আগুনে পুড়ি’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘কী যে করি’, ‘অবুঝ মন’, ‘রংবাজ’, ‘বেঈমান’, ‘আলোর মিছিল’, ‘অশিক্ষিত’, ‘অনন্ত প্রেম’, ‘বাদী থেকে বেগম’ ইত্যাদি। প্রায় ৩০০ সিনেমায় নায়ক হিসেবে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক।

নায়করাজ একাধারে ছিলেন অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক। দীর্ঘ সাড়ে ছয় দশক দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। পেয়েছেন দুই বাংলায় জনপ্রিয়তা।কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.