কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে ১০০ জনের শরীরে টিকা পুশ করলেন কুসিক কাউন্সিলর

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মহিলা কাউন্সিলরের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে ১০০ নারী-পুরুষের শরীরে টিকা পুশ করেছেন কাউন্সিলর নাদিয়া নাসরিন। তিনি কুসিকের ৪, ৫ ও ৬ সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর। ৯ আগস্ট নগরের গাংচর এলাকার হারুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় লাগোয়া নিজ অফিসে তিনি মডার্নার ওই টিকা পুশ করেন। তবে গত বৃহস্পতিবার টিকা দেওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।

এ ঘটনা তদন্তের জন্য শুক্রবার ৩ সদস্যের কমিটি করেছে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ। বিকেলে কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৯ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে হারুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় টিকা কেন্দ্রে সরকার দলীয় স্থানীয় কিছু নেতা-কর্মী শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে নিজেদের লোকদের আগে টিকা দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এতে সারিতে থাকা সাধারণ জনগণ ক্ষিপ্ত হন। এ নিয়ে প্রথমে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এরপর সংঘর্ষের আশঙ্কায় কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় নাদিয়া নাসরিন বেশ কয়েকটি টিকার ভায়েল ও বেশ কিছু বিশেষ সিরিঞ্জ নিয়ে টিকা কেন্দ্রের অদূরে তার নিজের বাড়ির সামনের কার্যালয়ে চলে যান। এ সময় তার অনুসারীরাও ওই কার্যালয়ে যান। সেখানে তিনি নিজ হাতে টিকা প্রত্যাশীদের মধ্যে করোনার টিকার (মডার্না) প্রথম ডোজ প্রয়োগ করেন।

এ বিষয়ে নাদিয়া নাসরিন সাংবাদিকদের বলেন, ৯ আগস্ট হারুন স্কুল টিকা কেন্দ্রে কর্মীদের সাথে বহিরাগতদের হাতাহাতি হয়। এরপর টিকা দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে তিনি টিকাগুলো তার অফিসে নিয়ে আসেন। এরপর নিজেই মানুষের শরীরে টিকা পুশ করেন। তিনি ১০০ জনকে টিকা দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি আরও বলেন, অতীতে আমার টিকা দেওয়ার প্রশিক্ষণ ও সনদ আছে। তাই আমি নিজেই টিকা দিয়েছি। এতে কারও কোনো অসুবিধা হয়নি।

এ বিষয়ে শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন বলেন, এ বিষয়টি তদন্তের জন্য তার কার্যালয়ের ডা. মো. ইকবালকে প্রধান করে এবং কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেডিকেল অফিসার ও ইপিআই সুপারভাইজারকে সদস্য করে ৩ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে।

You might also like

Comments are closed.