ঢাকার সঙ্গে একমাত্র যোগাযোগ এখন উড়োজাহাজে
করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের সড়ক ও নৌপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এখন রাজধানীর সঙ্গে একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম উড়োজাহাজ। সড়ক ও রেলপথে রাজধানীকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হলেও আপাতত বিমান চলাচল চালু থাকবে বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
বেবিচক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত ফ্লাইট বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। আমরা আরেকটু সময় নেব।’
বিমান চলাচল অব্যাহত রাখা হলেও সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিমানবন্দরগুলোতে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছি। কোনো অসুস্থ যাত্রীকে আমরা ফ্লাইটে চলাচলের অনুমতি দিচ্ছি না।
‘এরপর আমাদের প্রবাসী কর্মীদের বিদেশে তাদের কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার বিষয়গুলো রয়েছে। এখন সব দিক বন্ধ করে দিলে তারা সমস্যায় পড়বেন। তাই আপাতত এই একটি পথ তাদের জন্য খোলা রাখা হয়েছে। আমরা এয়ারলাইনসগুলোকে ফ্লাইটে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
এর আগে সচিবালয়ে সোমবার দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জরুরি বৈঠকে দেশের ৭ জেলায় শাটডাউনের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর গভীর রাত থেকে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর আগে ঢাকা থেকে দূরপাল্লার সব বাস বন্ধের সিন্ধান্তের কথা জানায় মালিক সমিতি। পাশাপাশি রেল মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, লকডাউন ঘোষিত এলাকায় কোনো রেল থামবে না।
এদিকে মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে সারা দেশের সঙ্গে সবধরনের রেল যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করে রেলের মহাপরিচালক।
এর আগে সোমবার মন্ত্রিপরিষদের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ২২ জুন সকাল ৬টা থেকে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী এবং গোপালগঞ্জ জেলায় সার্বিক কার্যাবলি/চলাচল (জনসাধারণের চলাচলসহ) বন্ধ থাকবে।
এ সময়ে শুধু আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা যেমন: কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের নদীবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবাসংশ্লিষ্ট অফিস, তাদের কর্মচারী, যানবাহন এবং পণ্যবাহী ট্রাক, লরি নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
জেলাগুলোতে কী কী বন্ধ থাকবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সবকিছু বন্ধ থাকবে। সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ থাকবে। মানুষও যাতায়াত করতে পারবে না। মালবাহী ট্রাক এবং অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কিছুই চলবে না।
এদিকে করোনা পরিস্থিতি সংক্রমণ রোধে দেশে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক মাস বাড়িয়ে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। গত ১৬ জুন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে এ বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়।