মামলা দায়েরে বাদীর এনআইডি নম্বর দিতে হাইকোর্টের আদেশ
আদালতে বা থানায় মামলা বা অভিযোগ (এফআইরআর) করার ক্ষেত্রে বাদী বা অভিযোগকারীকে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) নম্বর উল্লেখ করতে হবে বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিচারিক হাকিম বা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে এখন থেকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) ৪৯টি মামলা তদন্ত করে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ ‘অস্তিত্বহীন’ বাদীর মামলা চ্যালেঞ্জ করে করা এক রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার রুলসহ এই আদেশ দেন।
রুলে রিট আবেদনকারীর বিরুদ্ধে দায়ের করা বিভিন্ন ফৌজদারি মামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, পাশাপাশি মিথ্যা মামলার দায়েরের মাধ্যমে রিট আবেদনকারীকে যারা হয়রানি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এবং এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ও অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, র্যাবের মহাপরিচালক, ডিএমপি কমিশনার, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) উপ মহাপরিদর্শকসহ ৪০ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
অস্তিত্বহীন ৪৯টি মামলার বাদীকে খুঁজে বের করতে গত ৭ জুন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডির প্রতি নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। রাজধানীর শান্তিবাগের বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের পক্ষে আইনজীবী এমাদুল হক বসির রিটটি দায়ের করেন। কাঞ্চনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, চুরি-ডাকাতি, মানবপাচার, এসিড নিক্ষেপসহ নানা অভিযোগে ৪৯টি মামলা রয়েছে, যা অস্তিত্বহীন বলে রিটে দাবি করা হয়। এর মধ্যে গত বছর অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের যুগ্ম জেলা জজ আদালতে একটি কারখানার মালিক পরিচয় দিয়ে কাঞ্চনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় ৪৯তম মামলা। মামলার সেই বাদীকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এসব মামলায় তিনি ১ হাজার ৪৬৫ দিন জেল খেটেছেন বলেও রিটে উল্লেখ করা হয়।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এমাদুল হক বসির। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আইনজীবী এমাদুল হক বসির সাংবাদিকদের বলেন, মারামারির মামলায় ২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট সূত্রাপুর থানা পুলিশ একরামুল আহসান কাঞ্চনকে প্রথম গ্রেপ্তার করে। এরপর দুই বছর তিন মাস তিনি কারাগারে ছিলেন। এর মধ্যে ১৭টি মামলা হয়। ২০১৫ সালের ২১ মে জামিনে বের হয়ে আসেন কাঞ্চন। পরে আরও বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তিনি জামিনে বের হয়ে আসেন।
মামলাগুলোর সবশেষ অবস্থা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এমাদুল হক বসির বলেন, একরামুল আহসান কাঞ্চন ইতিমধ্যে ৩৬ মামলায় খালাস পেয়েছেন। বাকি ১৩ মামলায় তিনি জামিনে আছেন।