স্বরূপে জোলি!
বয়স বাড়লে অভিনয়শিল্পীরা ক্যামেরার সামনে থেকে পেছনেই বেশি কাজ করেন। মন দেন পরিচালনা বা প্রযোজনায়। হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলিও তেমনটাই করেছিলেন। ২০১৪ সাল থেকে অভিনয় কমিয়ে পরিচালনা শুরু করেন। সেই সময় আরেক হলিউড তারকা ব্র্যাড পিটের সঙ্গে ‘সুখের সংসার’ বেঁধেছিলেন জোলি। সেই সংসারে ম্যাডক্স, প্যাক্স, জাহারা, শিলো, ভিভিয়েন ও নক্স এই ছয় সন্তান। তাদের দাম্পত্য জীবন ভেঙে যায় ২০১৬ সালে। সন্তানরা আছে জোলির সঙ্গে; শুধু নেই পিট। বিয়ে বিচ্ছেদের পর অভিনয় চালিয়ে যাওয়া ‘অসম্ভব’ বলেই ধরে নিয়েছিলেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। কিন্তু পরিবারের জন্য আবারও অভিনয়ে ফিরেছেন বলে জানান জোলি।
সম্প্রতি হলিউডের ‘এন্টারটেইনমেন্ট উইকলি’ ম্যাগাজিনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জোলি বলেন, ‘পরিচালনা ভালো লাগে। কিন্তু আমার পরিবারে ঘটে যাওয়া একটি পরিবর্তন কয়েক বছর ক্যামেরার পেছনে দাঁড়াতে দেয়নি। সন্তানদের প্রয়োজনে বাড়িতে বেশি সময় কাটাতে পারি, এ জন্য ছোট ধরনের কাজের দরকার ছিল আমার। এ কারণেই অভিনয়ের অল্পকিছু কাজ নিয়েছিলাম আবার।’ ২০১৯ সালে জোলি অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘মেলফিসেন্ট :মিসট্রেস অব এভিল’ মুক্তি পায়। এরপর চলতি বছরের ১৪ মে মুক্তি পেয়েছে ‘দোজ হু উইশ মি ডেড’। এই ছবিতে আবারও পুরোনো মারকুটে রূপে ফিরেছেন জোলি। মনটানার বন্য পরিবেশে দাবানলের মাঝে এক নারীর লড়াইয়ের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে ছবিটি। একটি হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী হওয়ায় এক কিশোরীর পিছু নেয় ভয়ংকর দুই খুনি। তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে এক নারী।
একপর্যায়ে তারা ভয়াবহ দাবানলের মুখোমুখি হয়। ‘দোজ হু উইশ মি ডেড’ ছবিতে জোলি অভিনীত চরিত্রের নাম ‘হান্নাহ’। যিনি একজন অগ্নিনির্বাপক কর্মী। মূলত দাবানল থামাতেই ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকেন তিনি। এমন সময়ে একটি শিশুকে দুই খুনির হাত থেকে বাঁচানোর অতিরিক্ত দায়িত্ব নেন। ছবির চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন টেইলর শেরিডন। এর আগে তিনি নির্মাণ করেন ‘হেল অর হাই ওয়াটার’। ছবিটি সেরা চিত্রনাট্য বিভাগে ২০১৬ সালে অস্কার মনোনয়ন পায়। ‘দোজ হু উইশ মি ডেড’ ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন নিকোলাস হন্ট, টাইলর পেরি, ফিন লিটলসহ আরও অনেকে।
২০১৯ সালের মে মাসে ছবিটির দৃশ্যধারণ শুরু হয়েছিল। কাজ শুরুর দুই বছর পর মুক্তি পেল ছবিটি। করোনার এই সময়ে প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মুক্তির প্রথম তিন দিনে সিনেমাটি উত্তর আমেরিকায় মাত্র ২৮ লাখ ডলার আয় করেছে। আর বিশ্বব্যাপী আয় ৮১ লাখ ডলারের কিছু বেশি। প্রেক্ষাগৃহের পাশাপাশি ওয়ার্নার ব্রসের অন্য ছবিগুলোর মতো একই দিনে ভিডিও স্টিমিং প্ল্যাটফর্ম এইচবিও ম্যাক্সেও মুক্তি পেয়েছে। হলিউডের সিনেমা বিশ্নেষকরা বলছেন, মহামারি পরিস্থিতিতে পারিবারিক ও সিজিআইনির্ভর ছবিগুলো দর্শকদের হলে টানছে।
এর মাঝে জোলির থ্রিলার ধাঁচের ছবি খানিকটা পিছিয়ে পড়েছে। ‘দোজ হু উইশ মি ডেড’ ছবিতে বাস্তবে মা হিসেবে সন্তানের প্রতি যেমন আচরণ করেন, এই সিনেমার প্রয়োজনে কিছুটা পরিবর্তন করতে হয়েছে তাকে। জোলি বলেন, ‘মাঝে মাঝে পরিচালক আমাকে শুধরে দিতেন, কারণ সন্তানদের প্রতি আমার আর শিশুর প্রতি হান্নার ব্যবহারে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।’ সন্তানদের হাসিখুশি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে ভীষণ সতর্ক জোলি। করোনা মহামারির এই সময় চোখে চোখে রেখেছেন তাদের।