সাড়ে ৩ মাস পর পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি ভারতের
অবশেষে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। প্রায় সাড়ে ৩ মাস পর সোমবার রপ্তানি বন্ধের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নেওয়া হয়। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে। তবে রপ্তানির ক্ষেত্রে নিদিষ্ট কোন মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি।
সোমবার রাতে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রাতেই এ প্রজ্ঞাপনের কপি দিয়ে পেঁয়াজ রফতানির বিষয়টি ভারতীয় রফতানিকারকরা বাংলাদেশি আমদানিকারকদের জানিয়েছেন। মঙ্গলবার হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত সরকার গত ১৪ সেপ্টেম্বর কোনো পূর্ব ঘোষণা না দিয়ে অভ্যন্তরীণ সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় দেশে পেঁয়াজের দামে অস্থিরতা দেখা দেয়। সেসময় থেকে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা দ্রুত মিয়ানমার, পাকিস্তান ও চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানি চলমান রেখেছে। এর ফলে বাজারে কিছুটা পেঁয়াজের দামে স্বাভাবিকতা ফিরে আসে। এই অবস্থায় সোমবার ভারত সরকারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখার মহাপরিচালক অমিত ইয়াদব কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে আবারও বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন জানান, সোমবার রাত ১০টার দিকে ভারতের ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে আমরা একটি পত্র পেয়েছি। সেখানে উল্লেখ আছে, ভারত সরকার বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানিতে গত সেপ্টেম্বর মাসে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সেটি প্রত্যাহার করে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করার অনুমতি দিয়েছে। যেহেতু ১ জানুয়ারি শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির কারণে বন্দর বন্ধ থাকে। ফলে ২ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে আমদানি শুরু হতে পারে। আমরা নতুন করে এলসি করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে বাংলাদেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে কোনো মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। তাই ধারণা করা হচ্ছে, তিনশ’ ডলারের মধ্যেই আমদানি করা যাবে। ভারতের পেঁয়াজ বাজারে পাইকারি ২০-২৫ টাকার মধ্যে প্রতি কেজি বিক্রি হতে পারে।
এদিকে, হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করবো কিনা তা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রপ্তানি বন্ধের আগে আমাদের ১০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজের এলসি করা ছিল। অনেক অনুরোধের পরও সেই পেঁয়াজ ভারত আমাদের দেয়নি। এতে করে ব্যবসায়ীদের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। আর এখন দেশে ব্যাপক পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। কৃষকেরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই বিষয়ের প্রতিও খেয়াল রাখতে হবে।