ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি সেখানকার পার্লামেন্ট বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন। তার এ ঘোষণাকে অনুমোদন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বিদ্যা ভান্ডারি। ফলে দেশটিতে নতুন নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচন আগামী বছর মে মাসে হতে পারে। তবে কেপি শর্মার এই পদক্ষেপকে সাংবিধানিক অভ্যুত্থান হিসেবে আখ্যায়িত করছেন কোনো কোনো পার্লামেন্ট সদস্য। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া। এতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ওরফে প্রচ-ের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছিলেন কেপি শর্মা ওলি। পুষ্প কমল দাহাল ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির এক্সিকিউটিভ চেয়ারও।
তার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সাতজন মন্ত্রী এবং আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাধব নেপাল বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ওলি’র পদক্ষেপের প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন। এর ফলে নতুন এক আইনী লড়াই শুরু হতে পারে সেখানে। নেপালে সৃষ্ট এ পরিস্থিতিতে ভারত নীরব রয়েছে। ভারত সরকারের শীর্ষ স্থানীয় সূত্রগুলো বলেছেন, এটা নেপালের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু সেখানে যা ঘটছে সেদিকে নিবিড় নজরদারি করছে ভারত। কিন্তু নেপালে সৃষ্ট এ ঘটনায় সন্তুষ্ট নাও হতে পারে চীন। কারণ, কাঠমান্ডুতে নিয়োজিত তাদের রাষ্ট্রদূত নেপাল কমিউনিস্ট পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ অবস্থায় কাঠমান্ডু পোস্ট তার সম্পাদকীয়তে বলেছে, প্রধানমন্ত্রী ওলি সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন হারানোর পর বৈধতার বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছিলেন। পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করার মধ্য দিয়ে তিনি কিছুটা সময় পেলেন। তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল, মাধব কুমার নেপাল, জালা নাথ খানাল। প্রধানমন্ত্রীর বাজে শাসন ও কর্তৃত্বপরায়ণতার জন্য তার পদত্যাগ দাবি করেছেন তারা।
এখন বিষয়টি আদালতে উঠতে পারে। ফয়সালার জন্য যেতে পারে সুপ্রিম কোর্টে। তবে কাঠমান্ডু পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সুপ্রিম কোর্ট ওলির পক্ষেই রায় দিতে পারেন। ওলি পার্লামেন্টারি দলের দুই তৃতীয়াংশের বেশি সদস্যের সমর্থন উপভোগ করছেন। তাই তার কোনো বিপদ আসার কথা নয়। ওদিকে পুষ্প কমল দাহাল গ্রুপের শিল্পমন্ত্রী লেখা রাজ ভট্ট ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাম বাহাদুর থাপা সহ কিছু সদস্য পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। অন্যদিকে মূল বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেস এখনও বিশৃংখল অবস্থায় রয়েছে। তাতে রয়েছে নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক সমস্যা। এ ছাড়া জনতা সমাজবাদী পার্টি, সমাজবাদী পার্টি নেপাল থেকে বেরিয়ে নতুন গড়ে উঠা মধেষি পার্টি এবং রাষ্ট্রীয় জনতা পার্টিতেও রয়েছে নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দল। এর ফলে সুফল ভোগ করবেন প্রধানমন্ত্রী ওলি।