মন টিকছে না মেলানিয়ার
হোয়াইট হাউসে আর মন টিকছে না মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের। যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ফিরতে চান তিনি। হোয়াইট হাউসে থাকা ও ট্রাম্পের আইনি লড়াই নিয়েও একেবারে আগ্রহ নেই তার। ইতোমধ্যে নিজের জিনিসপত্র বাঁধা শুরু করে দিয়েছেন। এখন শুধু বের হলেই যেন বাঁচেন। এর আগে ট্রাম্পের সঙ্গে মেলানিয়ার বিচ্ছেদের গুঞ্জনও শোনা যায়। ফার্স্ট লেডির ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে সিএনএন।
নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের পরাজয় আঁচ করতে পেরে শুরু থেকেই ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করে আসছেন তিনি। প্রথম দিকে ভোট কারচুপি নিয়ে প্রকাশ্যেই স্বামীর সঙ্গে সুর মেলান ফার্স্ট লেডি মেলানিয়াও। কিন্তু ঘরের ভেতর তার মতামত একেবারেই আলাদা। তিনি মনে করেন, তার হোয়াইট হাউস জীবন শেষ হয়ে গেছে। এখন আর কোনো ঝামেলায় জড়াতে চান না তিনি। সোজা বাড়ি চলে যেতে চান। নির্বাচনের ফল স্পষ্ট হতেই গোপনে গোপনে হোয়াইট হাউস-পরবর্তী লাইফস্টাইল নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন তিনি। এরই মধ্যে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।
বুধবার এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানায়, ট্রাম্প যখন যে কোনোভাবে হোয়াইট হাউসে আরও চার বছর টিকে থাকতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাচ্ছেন, ঠিক সে সময়ে সব গুছিয়ে বিদায় নিতে চাইছেন মেলানিয়া। হোয়াইট হাউসে তাদের জিনিসপত্রের কোনটা ফ্লোরিডার পাম বিচের মার-এ-লাগো রিসোর্টে যাবে, আর কোনটা নিউইয়র্কের ট্রাম্প টাওয়ারে যাবে তা ঠিক করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। মেলানিয়ার মানসিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ‘তিনি (মেলানিয়া ট্রাম্প) কেবল বাড়ি ফিরতে চাচ্ছেন।’
ট্রাম্প ইতোমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, এবার শেষ পর্যন্ত হোয়াইট হাউস ছাড়তে হলে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। ফার্স্ট লেডি বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে সূত্রটি বলছে, এ ব্যাপারে মেলানিয়ার মনোভাব নেতিবাচক। ওই সূত্রের ভাষায়, ‘এটি সম্ভবত তিনি ভালোভাবে নিচ্ছেন না।’ এনবিসি জানিয়েছে, হোয়াইট হাউস থেকে মেলানিয়া ওয়াশিংটন নয়, নিউইয়র্কে ফিরতে চান। এমনকি ট্রাম্পের ২০২৪ সালের নির্বাচনে অংশ নিতেও নিষেধ করছেন তিনি।
আগে থেকেই গুঞ্জন রয়েছে, ট্রাম্পের রাজনীতিতে অংশ নেয়া পছন্দ হয়নি মেলানিয়ার। তিনি এ ব্যাপারে শুরু থেকেই বাধা দিয়ে এসেছেন। এতে তাদের পরিবারে কিছু পরিসরে কলহও হয়েছে। কিন্তু ট্রাম্প শোনেননি। মেলানিয়ার মন ও আবেগ বিশ্লেষণ করে মনোবিদরা বলছেন, গত ৪ বছরের বেশিরভাগ সময়ই ফার্স্ট লেডির চেহারায় নিরানন্দের ছাপ ছিল। যেন তিনি খানিকটা জোর করেই নিজেকে এই দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।
এদিকে গত এপ্রিল মাসে একজন বিশেষ সরকারি কর্মচারী হিসেবে মার্সিয়া লি কেলিকে নিয়োগ দেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে তার কাজ বেশ সহায়ক হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। কেলি এর আগে হোয়াইট হাউস অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফিস পরিচালনা করেছিলেন। ট্রাম্পকে ওয়াশিংটন-পরবর্তী জীবনের প্রস্তুতি নেয়ার ক্ষেত্রেও তিনি সাহায্য করতে পারবেন। জানা গেছে, কেলিকে ওয়েস্ট উইংয়ের পরিচিত ও অফিসিয়াল অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেটের পরিচিত কর্মকর্তাদের কাছে সাবেক ফার্স্ট লেডির জন্য করদাতা তহবিল বরাদ্দ রয়েছে কি না, তা খোঁজ নিতে বলেছেন মেলানিয়া।
তবে যুক্তরাষ্ট্রে সাবেক প্রেসিডেন্ট জীবিত অবস্থায় তার স্ত্রী সাবেক ফার্স্ট লেডির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয় না। মেলানিয়া ট্রাম্পের সাম্প্রতিক জীবনযাপন নিয়ে চিফ অব স্টাফ স্টাফানি গ্রিশাম সিএনএনকে বলেন, ‘মেলানিয়া ট্রাম্প ফার্স্ট লেডি হিসেবে বর্তমানে তার দায়িত্ব পালনেই ব্যস্ত। সম্প্রতি সংস্কারের পর রোজ গার্ডেনে একটি নতুন শিল্পকর্মের উন্মোচন করেছেন তিনি। তার অফিস কিছুদিন আগেই এই বছরের বড়দিনের সাজসজ্জা প্রকাশ করেছে। তিনি একজন মা হিসেবে, স্ত্রী হিসেবে ও ফার্স্ট লেডি হিসেবে তার দায়িত্ব পালনেই ব্যস্ত সময় পার করছেন।’