অবৈধ ও ব্যাগেজে মোবাইল আমদানি বন্ধ হচ্ছে
অবশেষে বন্ধ হচ্ছে অবৈধ ও ব্যাগেজের মাধ্যমে মোবাইল ফোন আমদানি। আগামীতে কেউ শুল্ক না দিয়ে কিংবা অবৈধ পথে মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানি করলে সেগুলো দেশে কার্যকর হবে না। আগামী ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে বলে বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে। এ নিয়ে একটি চুক্তি করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
তবে ২০১৯ সালের ১ আগস্টের আগে বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত সব ধরনের মোবাইল সেট এবং ২০১৯ সালের ১ আগস্টের পরে বৈধ পথে আমদানি করা এবং দেশে উৎপাদিত/সংযোজিত সব ফোন সেটের তথ্য কমিশনে সংরক্ষিত রয়েছে। এর বাইরে যদি কোনো মোবাইল সেট থাকে সে বিষয়ে পরবর্তীতে কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
অবৈধ মোবাইল সেট বন্ধ ও বৈধ সেটের নিবন্ধন কার্যকর করতে বুধবার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সঙ্গে চুক্তি করেছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান সিনেসিস আইটি।
বিটিআরসি কার্যালয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বিটিআরসির পক্ষে স্পেকট্রাম ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক লেফটেনেন্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সাল ও সিনেসিসের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহরাব আহমেদ চৌধুরী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি অনুযায়ী ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সিস্টেম কার্যক্রম চালু করতে হবে সিনেসিসকে। এই চুক্তি ফলপ্রসূ হবে বলে আশা প্রকাশ করে বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক বলেন, এই চুক্তি সব আইন মেনে করা হয়েছে। দেশীয় কোম্পানি বলে কোনো দয়া করে সিনেসিসকে কাজ দেয়া হয়নি, যোগ্যতার কারণেই তারা কাজ পেয়েছে। এখন তাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে তারা যেন আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে কাজটা সম্পন্ন করে।
সিনেসিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহরাব আহমেদ চৌধুরী বলেন, প্রকল্পটি পুরোপুরি দেশীয় প্রযুক্তি দিয়ে বাস্তবায়ন ও সুসম্পন্ন করা হবে। চুক্তি অনুয়ায়ী ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে, অর্থাৎ আগামী মার্চ থেকে জুনের মধ্যে প্রকল্প চালু করার কথা রয়েছে।
বিটিআরসির স্পেকট্রাম ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-পরিচালক সঞ্জীব কুমার সিংহ বলেন, দেশে অবৈধ পথে মোবাইল সেট আসার কারণে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। গত এক বছরে অবৈধভাবে মোবাইল সেট প্রবেশের কারণে চার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব থেকে সরকার বঞ্চিত হয়েছে।
এছাড়া অবৈধ মোবাইল সেট প্রবেশের কারণে দেশের নিরাপত্তা, এই শিল্পের সার্বিক ক্ষতি এবং সেসব মোবাইল সেটে নিয়ন্ত্রিত মাত্রার বেশি রেডিয়েশনের কারণে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বাড়ছে।
অনুষ্ঠানে অনলাইনে গ্রাহকদের কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিটিআরসির উপ-পরিচালক জাকির হোসেন খান। এনইআইআর সিস্টেম কীভাবে পরিচালিত হবে এবং গ্রাহক কীভাবে এতে সম্পৃক্ত হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এনইআইআর সিস্টেমটি সরাসরি প্রত্যেক মোবাইল অপারেটরের ইআইআরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। গ্রাহকদের মোবাইল ফোন সেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোবাইল নেটওয়ার্কের সঙ্গে নিবন্ধিত হয়ে ব্যবহার উপযোগী হবে।
এই ব্যবস্থা চালু হলে বাজারে বা আগে থেকে গ্রাহকদের হাতে থাকা মোবাইল সেটের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে প্রশ্নে জাকির হোসেন বলেন, ২০১৯ সালের ১ আগস্টের আগে বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত সব মোবাইল সেট এবং ২০১৯ সালের ১ আগস্টের পরে বৈধ পথে আমদানি করা এবং দেশে উৎপাদিত/সংযোজিত সব ফোন সেটের তথ্য কমিশনে সংরক্ষিত রয়েছে। এর বাইরে যদি কোনো মোবাইল সেট থাকে সে বিষয়ে পরবর্তীতে কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।