চূড়ান্ত ফলও বললো, ফাইজারের টিকা ৯৫% কার্যকর

মার্কিন ওষুধ কম্পানি ফাইজার এবং জার্মান জৈব-প্রযুক্তি কম্পানি বায়োএনটেক উদ্ভাবিত টিকা করোনা মোকাবেলায় ৯৫ শতাংশ কার্যকর বলে তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফলে উঠে এসেছে। এর আগে গত সপ্তাহে এই ধাপের প্রাথমিক ফলে টিকাটির কার্যকারিতা ৯০ শতাংশের বেশি বলে জানানো হয়। ফাইজার বলছে, প্রয়োজনীয় সুরক্ষা মানদণ্ড পূরণ করেছে টিকাটি। জরুরি অনুমোদনের জন্য শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হবে।

টিকার কার্যকারিতা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রথম ডোজ নেওয়ার ২৮ দিনের মধ্যে ৯৫ শতাংশ স্বেচ্ছাসেবী ভাইরাস থেকে রক্ষা পেয়েছে। এটি ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে ৯৪ শতাংশ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। টিকাটি গ্রহণের পর গুরুতর কোনো দুঃসংবাদ পাওয়া যায়নি। এটির সুরক্ষা নিয়ে তেমন কোনো উদ্বেগ নেই। ৪৩ হাজার টিকাগ্রহীতার মধ্যে মাত্র ২ শতাংশের মাথাব্যথা এবং ৩.৭ শতাংশের ক্লান্তিবোধ দেখা দেয়।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আইল্যান্ড, টেক্সাস, নিউ মেক্সিকো ও টিনেসি অঙ্গরাজ্যে ফাইজারের টিকার পরীক্ষামূলক সরবরাহের পাইলট কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। তবে এই সরবরাহপ্রক্রিয়ায় সমস্যা হচ্ছে তাপমাত্রা। ফাইজার উদ্ভাবিত টিকা সংরক্ষণ করতে হয় মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। অন্য সাধারণ টিকা রাখা হয় ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ ক্ষেত্রে ফাইজারের এই টিকা সাধারণ ওষুধ বিতরণকারীদের কাছে রাখা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

ফাইজার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘টিকার পাইলট কর্মসূচি চালু হয়েছে। এতে আমরা আশা করতে পারি, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য রাজ্যগুলো এবং আন্তর্জাতিক সরকারগুলোর জন্য এই সরবরাহ একটি মডেল হিসেবে কাজ করবে।’

গত সোমবার মার্কিন জৈব-প্রযুক্তি কম্পানি মডার্না উদ্ভাবিত করোনার টিকা ৯৪.৫ শতাংশ কার্যকর বলে প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে। ওই টিকার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার পর প্রাথমিক ফলের ভিত্তিতে মডার্না এই দাবি করে। মডার্নার টিকার চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক অংশ নেয়। আর রাশিয়ার টিকা স্পুিনক ভি ৯২ শতাংশ কার্যকর বলে বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে।

করোনাভ্যাকও সফল : চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেকের টিকা করোনাভ্যাক মাঝ পর্যায়ের ট্রায়ালে সফলতা দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। ৭০০-এরও বেশি লোকের ওপর চালানো ট্রায়ালে দেখা গেছে, টিকা প্রয়োগের পর তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দ্রুত চাঙ্গা করে তোলে।

চীনের চারটি সম্ভাব্য টিকা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রবেশ করেছে, তার মধ্যে সিনোভ্যাক বায়োটেকের এই টিকাও আছে। তবে বিজ্ঞান সাময়িকী ল্যানসেটে টিকাটির প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের ফলই শুধু দেওয়া হয়েছে।

প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালে ১৪৪ জন এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ৬০০ জনের ওপর প্রয়োগের পর পাওয়া ফলাফলে টিকাটি যে ‘জরুরি ব্যবহারে উপযুক্ত’, তা বোঝা গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক জু ফেংচাই। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.