বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের অনুপ্রেরণা: রাষ্ট্রপতি
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্ম, চিন্তা, আদর্শ ও দর্শন বাংলাদেশসহ বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে দেশের রাজনীতিবিদ, ঐতিহাসিক, শিক্ষাবিদ, গবেষক ও সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিব বর্ষ উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনের ভাষণে সোমবার তিনি বলেন, রাষ্ট্র, দেশ ও জীবন গড়তে বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম ও আদর্শ নতুন প্রজন্মের জন্য বড় অনুপ্রেরণা হয়ে আছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে আলাদা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশকে জানতে হলে বাঙালির মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে হবে, বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে। এ দুই সত্তাকে আলাদাভাবে দেখার চেষ্টা যারা করেছেন, তারা ব্যর্থ হয়েছেন। আজকের বাস্তবতাই এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে জাতি এগিয়ে যাক ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পথে, নোঙর ফেলুক বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’য়।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়। বঙ্গবন্ধু একটি প্রতিষ্ঠান, একটি সত্তা, একটি ইতিহাস। জীবিত বঙ্গবন্ধুর মতোই অন্তরালের বঙ্গবন্ধু শক্তিশালী। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, বাঙালি থাকবে, এ দেশের জনগণ থাকবে, ততদিনই বঙ্গবন্ধু সবার অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন। নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের মুক্তির আলোকবর্তিকা হয়ে তিনি বিশ্বকে আলোকময় করেছেন। তাই দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে বঙ্গবন্ধুর নীতি, আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বেড়ে উঠতে পারে, সে লক্ষ্যে সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে।
মহামারীকালীন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদের এ বিশেষ (দশম) অধিবেশনের দ্বিতীয় কার্যদিবসে রাষ্ট্রপতির ভাষণের সময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও সরকার ও বিরোধীদলীয় সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণজনিত মহামারীকে বৈশ্বিক সমস্যা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, একক বা আঞ্চলিক ভিত্তিতে এর প্রাদুর্ভাব মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। কেউই সুরক্ষিত নই, যতক্ষণ না সুরক্ষার জন্য ভ্যাকসিন আবিষ্কার হচ্ছে। অতীতে মানবসভ্যতার ইতিহাসে প্লেগ, স্প্যানিশ ফ্লু, কলেরা, টাইফয়েড, যক্ষ্মা, হাম, মেনিনজাইটিস, পোলিও ইত্যাদি মহামারী ও সংক্রামক ব্যাধিতে কোটি কোটি লোক প্রাণ হারিয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞান থেমে থাকেনি। সময়ের অগ্নিপরীক্ষায় মানুষ এসবের প্রতিষেধক আবিষ্কার করেছে। তাই একসময় যা মহামারী ছিল, আজ তা বিশ্ব থেকে নির্মূল হয়েছে।
ভাষণ শেষে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির হাতে উপহার হিসেবে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীমূলক স্মারক গ্রন্থ তুলে দেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।