গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র অনুমতি পেলো, করোনার কিট উৎপাদন শুরু
করোনাভাইরাস শনাক্ত করার কিট উৎপাদনের অনুমোদন পেয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। বৃহম্পতিবার সকালে সরকার তাদের এই কিট উৎপাদনের অনুমতি দেয়।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অর্থ ব্যবস্থাপক মনিকা সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মনিকা সরকার বলেন, করোনাভাইরাস শনাক্ত করার কিট উৎপাদনের প্রস্তুতি আমাদের আগে থেকেই ছিল। অনুমতি পাওয়ার পরপরই উৎপাদন শুরু করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করে, তারা সহজ উপায়ে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষার পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। মাত্র ৩০০ টাকা মূল্যের এই কিট গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং আরএনএ বায়োটেক যৌথভাবে তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র জানায়, গণস্বাস্থ্য-আরএনএ বায়োটেক লিমিটেডের গবেষক দল ফেব্রুয়ারি থেকে এই কিটের ডিজাইন এবং উৎপাদন প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছেন। এ প্রযুক্তির ব্যাপারে পুরো গবেষক দলের সরাসরি কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। এর আগে ২০০৩ সালে র্যাপিড ডট ব্লট সার্স পিওসি কিট তৈরি দলের সদস্য ছিলেন ড. বিজন কুমার শীল। ওই কিটটি সিঙ্গাপুরে পেটেন্ট করা হয়েছিল। এবার করোনার কিট তৈরির জন্য গঠিত গবেষক দলকে নেতৃত্ব দেন বিজন কুমার। তার সঙ্গে আছেন ড. মোহাম্মদ রাশেদ জমিরউদ্দিন ও ড. ফিরোজ আহমেদ। এই কিট তৈরির জন্য বিএসএল টু প্লাস ল্যাব তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ব্লাড গ্রুপ যে পদ্ধতিতে চিহ্নিত করা হয় এটা মোটামুটি সে রকমের একটি পদ্ধতি। ২০০৩ সালে যখন সার্স ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল তখন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল সিঙ্গাপুরের গবেষণাগারে কয়েকজন সহকারীকে নিয়ে সার্স ভাইরাস দ্রুত নির্ণয়ের পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ‘র্যাপিড ডট ব্লট’ পদ্ধতিটি ড. বিজন কুমার শীলের নামে পেটেন্ট করা। পরে এটি চীন সরকার কিনে নেয় এবং সফলভাবে সার্স মোকাবেলা করে। তারপর তিনি সিঙ্গাপুরেই গবেষণা করছিলেন ডেঙ্গুর ওপরে। গবেষণা চলাকালে তিনি দুই বছর আগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগ দেন। আমাদের এখানে যখন যোগ দিলেন তখন তিনি ডেঙ্গু নিয়ে কাজ করছিলেন। তিনি আমাদের গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালের প্রধান বিজ্ঞানী। উনি সাভারে আমাদের ক্যাম্পাসে থাকেন। উনি গত দুই মাসে করোনার গবেষণা পারফেক্ট করেন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এই কিট মাত্র ২০০ টাকায় সরবরাহ করতে পারবে। তবে জনসাধারণের কাছে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় এই পরীক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারের ব্যবস্থা নিতে হবে বলে মনে করে তারা।