হাতেনাতে খুনিকে ধরেও ব্যবসায়ীকে বাঁচাতে না পেরে এসআই শাহিনের আফসোস!
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনায় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে তোফাজ্জল হোসেন (৩৫) নামে এক কাপড় ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহতের শ্যালক ফয়সাল রহমান (২৮)। ছিনতাইকালে পুলিশের এসআই শাহিন কাদির সাহসিকতার সঙ্গে এক ডাকাতকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেন। পরে অন্য এক ডাকাতকে আটক করা হয়।
জানা যায়, সিরাজগঞ্জ থেকে কাপড় এনে কুমিল্লার লাকসাম ও চৌদ্দগ্রামসহ বিভিন্ন উপজেলার মার্কেটে পাইকারি দরে বিক্রি করতেন নিহত তোফাজ্জেল ও ফয়সাল। ব্যবসায়িক কাজ শেষে গতকাল গভীররাতে লাকসাম থেকে পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে এসে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্য একটি পিকআপে উঠেন তারা।
এটি যে ডাকাতদের পিকআপ, সেটা তারা বুঝতে পারেন নি, ঢাকাগামী কোন বাসও পাচ্ছিলেন না তারা। চান্দিনার গোবিন্দপুর সড়কে এসে ডাকাতরা তাদের কাছ থেকে কাপড় ও টাকা লুটে নিতে চাইলে দুজন বাঁধা দেন । এরপরই ডাকাতরা এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ডাকাতরা যখন উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করছিলো দুই ব্যাবসায়িকে, অন্য গাড়িগুলো ঘটনা দেখেও চলে যাচ্ছিলো পাশ কাটিয়ে। এমন সময় কুমিল্লা কোতয়ালি থানাধীন ছত্রখীল ফাঁড়ি ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহিন কাদির যাচ্ছিলেন সেই পথ দিয়ে। ব্যাবসায়ীদের ক্ষীণ চিৎকার শুনে গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়েন শাহিন। অস্ত্রধারী ডাকাতদের সাথে তুমুল সাহসিকতার সাথে লড়ে যান তিনি।
পালিয়ে যাওয়ার সময় ছুরি হাতে ব্যবসায়ীদের আঘাত করা ডাকাত সুজনকে আটক করে চান্দিনা থানায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন, অ্যাম্বুলেন্স আনিয়ে আহত দুই ব্যবসায়িকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পরে চান্দিনা থানার টহলরত পুলিশের দুটো গাড়ি আসার পর পিকআপভ্যানসহ ডাকাতকে তাদের হাতে সোর্পদ করেন।
হাসপাতালে নেওয়ার পর তোফাজ্জ্বল মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। অপর আহত মোঃ ফয়সলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তার অবস্থাও আশংকাজনক।
এসআই শাহিন কাদির মাল্টিনিউজটোয়েন্টিফোরকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘খুবই খারাপ লাগছে নিহত লোকটার জন্য। অনেক চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারলাম না। অস্ত্রধারী ডাকাতদের সামলাতে আর ছুরি দিয়ে পেট ফুঁড়ে দেয়া মানুষটিকে বাঁচিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছিলাম। অনেক গাড়িকে ইশারা করেছি- থেমে লোকটাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে সাহায্য করার জন্য, কেউ দেখেও থামেনি! আর হয়তো কয়েক মিনিট আগে হাসপাতালে পাঠাতে পারলে মানুষটা বেঁচে যেতো।’
উল্লেখ্য, ডাকাতদের করা গুলি এবং মাদক ব্যবসায়ীদের চালানো হামলাসহ এ নিয়ে ওই মহাসড়কে চতুর্থবারের মতো হামলার শিকার হলেন শাহিন কাদির।