৫ মিনিট ধরে জোরপূর্বক চুম্বন, কান্নায় ভেঙে পড়েন রেখা

বলিউড অভিনেত্রী রেখার জীবন নানা কারণেই ছিল বৈচিত্র্যময়। মা ছিল, কিন্তু বাবার স্বীকৃতি ছিল না। অভিনয়ে গিয়ে কিশোরী বয়সে জোরপূর্বক চুমুর কবলে পড়েন। খুব বাজে অভিজ্ঞতা নিয়ে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে যাত্রা শুরু হয় রেখার।

অভাব থেকে অভিনয়ে আসা এই অভিনেত্রীর জীবনজুড়েই ছিল সংগ্রাম।
রেখা নেহাতই পেটের দায়ে চলচ্চিত্রে নেমেছিলেন। নিজের জন্য, সংসারের জন্য। মা-বোনদের জন্য।

রেখার ছিল জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ। গত শতকের ৫০ দশকের মাঝামাঝি। সে সময়ের পরিচিত তামিল অভিনেতা জেমিনি গণেশন ও তেলেগু অভিনেত্রী পুষ্পাভ্যালির ঘরে ভানুরেখা গণেশন ওরফে রেখার জন্ম ১৯৫৪ সালে।

পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া এই নারী নিজেই বলেছেন, ‘বেশির ভাগ সময় আমি ছিলাম আমার ভাই-বোনদের মা, এমনকি আমার মায়েরও মা।’

মাত্র ১৪ বছর বয়সে স্কুল ত্যাগ করতে হয় রেখাকে। কেননা তাঁর মা তাকে দুটি অপশন দিয়েছিলেন, এক. কাজ করতে হবে, দুই. অভিনয় করতে হবে। অভিনয়কেই বেছে নিলেন রেখা।

কিশোরী রেখা ঠিক করেন বলিউডে নেমে পরিবারের অভাব দূর করবেন। অডিশন দিতে লাগলেন। কিন্তু রেখা ছিলেন কৃষ্ণকলি, কালো তাঁর গায়ের রং। গায়ের রং ফর্সা ছিল না। তখন বলিউডে নায়িকা হতে গেলে প্রথম শর্ত, ফর্সা হতে হবে। আবার হিন্দিও জানতেন না একেবারেই। তাই প্রযোজক-পরিচালকেরা ফিরিয়ে দিতে থাকেন তাঁকে।

তবে শ্যাম বেনেগাল রেখাকে দেখে, তাঁর অভিনয়শৈলী দেখে বুঝতে পারলেন এই মেয়ের দ্বারা হবে। তখন বয়স মাত্র ১৩-১৪ রেখার, কিন্তু অভিনয় মুগ্ধ করল শ্যাম বেনেগালকে। প্রথম চলচ্চিত্রে পারিশ্রমিক পেলেন ২৫ হাজার টাকা।

১৯৬৯ সালে ‘গোয়াদাল্লি সিআইডি ৯৯৯’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে রুপালি পর্দায় তাঁর ভ্রমণ শুরু। তার আগে অবশ্য রেখা ১৯৬৬ সালে তেলুগু চলচ্চিত্র ‘রাঙ্গুলা রত্নম’–এ বেবি ভানুরেখা নামে শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৭০ সালে ভানু রেখা গণেশন অভিনয় করেছিলেন বলিউডের ছবি ‘শাওন ভাদো’তে। ওই বছরই প্রথম হিন্দি ছবি ‘আনজানা সফর’-এ সুযোগ মেলে তাঁর; কিন্তু কপাল ফেরেনি। সে ছবি মুক্তি পেতে কয়েক বছর লাগে।

প্রথম দিকে মুক্তি না পাওয়ার জন্য দায়ী না হলেও কারণ রেখাই। ‘আনজানা সফর’ ছবিটি ওই সময় সেন্সর বোর্ডে আটকে যায়। কারণ, সহশিল্পী বিশ্বজিতের সঙ্গে কিশোরী রেখার পাঁচ মিনিটের দীর্ঘ চুম্বনের দৃশ্য।

তখন তিনি ১৫ বছরের কিশোরী। রেখার নায়ক ছিলেন বিশ্বজিৎ। ছবিতে একটি চুমুর দৃশ্য ছিল। বিশ্বজিৎ নাকি জোর করে অনেক সময় ধরে রেখাকে চুমু খেয়েছিলেন। আর এতে স্তম্ভিত হয়ে যান নায়িকা। কোনো কথা না বলে রেখাকে টানা পাঁচ মিনিট ধরে চুমু খেয়েছিলেন তিনি। ছবির কলাকুশলীরা সবাই চারপাশ থেকে চিৎকার করছিল এবং চটুল মন্তব্য ছুড়ে দিচ্ছিল তাঁদের উদ্দেশে। আর রেখার দুচোখ বেয়ে ঝরে পড়ছিল জল। কী ভয়ংকর ছিল ১৫ বছরের কিশোরীর ওই মুহূর্ত। পরে অবশ্য বিশ্বজিৎ দাবি করেছিলেন, গোটা ঘটনাটি পরিচালকের আইডিয়া ছিল।

You might also like

Comments are closed.