২ ভাইকে হত্যা করতে খু/নিরা ছুড়ল ৪৮ রাউন্ড গুলি

দিল্লি

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জাফরাবাদ এলাকায় এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে গত সোমবার রাতে দুই ভাইকে হত্যা করা হয়। দুই ভাই মোহাম্মদ ফাজিল (৩১) এবং তার ভাই নাদিম (৩৩) মায়ের সঙ্গে বাইরে রাতের খাবার খেতে বের হওয়ার সময় তাদের চাচাতো ভাইসহ তিনজন লোক তাদের ওপর গুলি চালায়।পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা প্রায় ৪৮টি গুলি ছোড়ে বলে অভিযোগ। এর মধ্যে ৩৫টি গুলি দুই ভাইয়ের শরীরে বিদ্ধ হয়েছে।
এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।একজন পুলিশ কর্মকর্তার মতে, চৌহান বাঙ্গার এলাকায় রাত ১টা ৪০ মিনিট নাগাদ এই হামলার ঘটনা ঘটে। ফজিল ও নাদিম তাদের স্কুটারে যাচ্ছিলেন। তখন তিনজন মোটরসাইকেলে করে এসে পৌঁছায়।
ভাইদের দেখতে পাওয়ার পরপরই অভিযুক্তরা গুলি চালায়। পুলিশ এই ঘটনায় আরো দুজনের জড়িত থাকার সন্দেহ করছে।পুলিশের মতে, দুই ভাইকে হত্যা করতে সন্ত্রাসীরা ‘জিগানা’-এর মতো উন্নত মানের বিদেশি পিস্তল ব্যবহার করেছে। ফাজিলের শরীরে ২০টি ও নাদিমের শরীরে ১৫টি গুলি লেগেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীদের একজন আসাদ কুরেশি তাদের চাচাতো ভাই। তার সঙ্গে দুই ভাইয়ের ব্যাবসায়িক বিরোধ ছিল। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনটি ভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রের কার্তুজ উদ্ধার করেছে।পুলিশ জানিয়েছে, আসাদ কুরেশি এর আগেও একটি খুনের মামলায় কারাগারে ছিলেন। সম্প্রতি জামিনে বেরিয়ে এসেছিলেন।
আসাদের ধারণা ছিল, নাদিমই পুলিশের কাছে খবর দিয়ে তাকে ধরিয়ে দিয়েছিলেন। সেই ক্ষোভ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড। পুলিশ জানিয়েছে, আসাদ একাধিক ফৌজদারি মামলায় জড়িত এবং এমসিওসিএ মামলায় পলাতক হাশিম বাবা গ্যাং সদস্য ববি কবুতরের সহযোগী।নিহতের বড় ভাই ওয়াসিম বলেন, তিনি আসাদকে আক্রমণকারীদের মধ্যে দেখেছেন। তিনি বলেন, আসাদ আমাদের ফুপুর ছেলে এবং কাছেই থাকে। হামলার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন। ও আগেও আমাদের হুমকি দিয়েছিল, কিন্তু পরে তার বাবা-মায়ের উপস্থিতিতে একটি আপস করে। এতো কিছুর পরেও আসাদ আমার ভাইদের হত্যা করেছে।’তিনি আরো বলেন, গত কয়েক মাস ধরে আসাদ এবং নাদিমের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছে। নাদিম শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ছিল… হাঁটতে পারত না বলে ওয়াসিম উল্লেখ করেন। পাঁচ বছর আগে নাদিমের একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল, যার ফলে নাদিম পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল।

এদিকে এই ঘটনায় জাফরাবাদের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ‘কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাদের লক্ষ্য করে প্রায় ৪৮টি গুলি চালানো হয়। ফাজিল ঘটনাস্থলেই মারা যান। তবে নাদিম জেপিসি হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান।’

পুলিশ জানিয়েছে, নাদিমের জ্যাকেটের ব্যবসা রয়েছে। পাশাপাশি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারও ছিল। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলাও আছে। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে এবং আসামিদের ধরতে ছয়টি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনায় ঘটনায় জাফরাবাদ থানায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস) এর ১০৩(১) এবং ৩(৫) ধারা এবং অস্ত্র আইনের ২৫ এবং ২৭ ধারার অধীনে একটি মামলা করা হয়েছে এবং তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ওই এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে ছয়টি দল মোতায়েন করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা বলেন। অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা নিয়ে আসাদের সঙ্গে ফাজিল ও নাদিমের কোনো নতুন বিবাদ তৈরি হয়েছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.