১ লাখ ৬০ হাজার বছর পর দুর্লভ ধূমকেতু দেখতে পারে বিশ্ব
বিরল উজ্জ্বল এক ধূমকেতু। সর্বশেষ ১ লাখ ৬০ হাজার বছর আগে দেখেছিল তখনকার প্রজন্ম। সেই ধুমকেতু আগামী কয়েকদিনে আকাশে দেখা যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, ধূমকেতুর উজ্জ্বলতার পূর্বাভাস দেওয়া সাধারণত অনেকটাই কঠিন। তবে এই ধূমকেতুটি খালি চোখে দেখার মতো উজ্জ্বল হতে পারে। খবর বিবিসির।
বর্তমানে এই ধূমকেতু পথ পর্যবেক্ষণ করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। গত ১১ জানুয়ারি নাসার মহাকাশচারী ডন পেটিট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে ধূমকেতুর একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, অরবিট থেকে ধূমকেতু দেখা একেবারেই চমকপ্রদ। অ্যাটলাস সি/২০২৪ জি৩ আমাদের পৃথিবীতে আসছে। এটি দেখতে চাইলে আপনার অঞ্চলের আকাশ পরিষ্কার কি না তা নিশ্চিত করে নিন।
গত ১৩ ডিসেম্বর ধূমকেতুটি সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে ছিল, যাকে পেরিহেলিয়ন বলা হয়। এই অবস্থান ধূমকেতুর উজ্জ্বলতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি সোমবার রাত থেকে দৃশ্যমান হওয়ার কথা বলে বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন।
যদিও ধূমকেতু কোথা থেকে সবচেয়ে ভালো দেখা যাবে তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এটি দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে সবচেয়ে ভালো দেখা যেতে পারে। বলা হচ্ছে, এটি শুক্রগ্রহের মতো উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে।
গত বছর নাসার অ্যাস্টেরয়েড টেরেস্ট্রায়াল ইমপ্যাক্ট লাস্ট অ্যালার্ট সিস্টেম (অ্যাটলাস) এই ধূমকেতুটি শনাক্ত করেছিল।
কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষক ড. শ্যাম বালাজি জানিয়েছেন, ধূমকেতুটি সূর্যের প্রায় ৮.৩ মিলিয়ন মাইল দূর দিয়ে অতিক্রম করবে। এটি একটি সূর্য-সংলগ্ন ধূমকেতু হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এটিকে প্রতি ১ লাখ ৬০ হাজার বছরে একবার ঘটে যাওয়া ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছে। তিনি আরও জানান, পেরিহেলিয়নের আশেপাশের দিনগুলোতে এটি দেখার সুযোগ তৈরি হতে পারে, তবে এটি নির্ভর করবে স্থানীয় আবহাওয়ার অবস্থার উপর।
কোথায় এবং কীভাবে দেখবেন : যারা ধূমকেতুটি দেখতে চান, তাদের জন্য ড. বালাজি জানান, দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলোর বাসিন্দারা সূর্যোদয়ের আগে পূর্ব দিকের আকাশে এবং পেরিহেলিয়নের পর সূর্যাস্তের পরে পশ্চিম দিকের আকাশে লক্ষ্য রাখতে পারেন। ধূমকেতুটি দেখতে আলো দূষণহীন একটি জায়গা বেছে নিন। বাইনোকুলার বা ছোট টেলিস্কোপ ব্যবহার করুন।
তবে উত্তর গোলার্ধে, যেমন এশিয়ার দেশগুলোতে সূর্যের অবস্থানের কারণে এটি দেখা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।