স্বাস্থ্য খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং …

গ্রোক চ্যাটবটে ব্যক্তির চিকিৎসা তথ্য প্রকাশ (আপলোড) করায় ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মতো এক্স ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার কঠোর গোপনীয়তা নীতির অধীনে নেই। যুক্তরাষ্ট্রের হেলথ ইনস্যুরেন্স পোর্টেবিলিটি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টেবিলিটি অ্যাক্ট স্বাস্থ্যসম্পর্কিত তথ্য সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেয় কিন্তু এক্সের মতো মাধ্যমের ওপর এই আইন প্রযোজ্য নয়।

গ্রোক : এক্সের গোপনীয়তা নীতিমালা অনুযায়ী, তারা তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য বিক্রি করে না। তবে ‘সম্পর্কিত কোম্পানির’ সঙ্গে তথ্য শেয়ার করতে পারে। এটিই গ্রোক চ্যাটবটে মেডিকেল তথ্যের ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। কারণ, এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যতথ্য অন্য কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।

ভুল রোগনির্ণয়ের ঝুঁকি : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে রোগনির্ণয়ে ভুল হলে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। ভুলের কারণে মারাত্মক রোগনির্ণয়ে বিলম্ব হতে পারে। একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, গ্রোক মেরুদণ্ডের টিউবারকিউলোসিস শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মেশিন লার্নিং ও হেলথকেয়ার ল্যাবের পরিচালক সুচি সারিয়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে যথাযথ পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তাঁর মতে, স্বাস্থ্য খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সফল করতে কঠোর পরীক্ষা ও নিরীক্ষা প্রয়োজন।

তথ্য শেয়ারিং: ঝুঁকি না সম্ভাবনা : কিছু ব্যবহারকারী মনে করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্বাস্থ্য খাতে উন্নতি আনতে পারে। এই প্রবণতাকে বিশেষজ্ঞরা ‘তথ্য আলট্রুইজম’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যেখানে ব্যক্তি প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করেন। তবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সুবিধা এবং ঝুঁকির ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি।

পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল এথিকসের সহকারী অধ্যাপক ম্যাথিউ ম্যাককয় বলেছেন, গ্রোকের কিছু সুরক্ষাব্যবস্থা থাকতে পারে। কিন্তু এসব সুরক্ষাব্যবস্থা এখনো প্রকাশিত হয়নি। তাই সংবেদনশীল তথ্য শেয়ার করার আগে ব্যবহারকারীদের সতর্ক থাকতে হবে।

স্বাস্থ্য খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎ : ইলন মাস্কের গ্রোক প্রকল্প স্বাস্থ্য খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারকে নতুন রূপ দিতে চায়। বর্তমানে রেডিওলজির মতো ক্ষেত্রে বিশেষায়িত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অগ্রগতি সাধন করছে। কিন্তু গ্রোক ব্যবহারকারীর তথ্যের ওপর নির্ভরশীল। এ পদ্ধতি ঐতিহ্যগত পদ্ধতি থেকে আলাদা। সমালোচকেরা বলছেন, এই পদ্ধতিতে যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা ও নির্ভুলতা নিশ্চিত করার প্রয়োজন রয়েছে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে স্বাস্থ্য খাতে সফল করতে স্বচ্ছতা, নৈতিক বাস্তবায়ন এবং নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। জেনেটিক ইনফরমেশন ননডিজক্রিমিনেশন অ্যাক্ট এবং আমেরিকানস উইথ ডিজঅ্যাবিলিটিজ অ্যাক্টের মতো আইন কিছু সুরক্ষা প্রদান করে। তবে এখনো কিছু ক্ষেত্রে এর ফাঁকফোকর রয়েছে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.