স্বাস্থ্যখাতে দাতা সংস্থার অর্থে অনিয়মের প্রতিবেদন দুদকে

গণঅভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করোনাকালীন দাতা সংস্থা থেকে পাওয়া অর্থের নয়-ছয় করতে প্রতিটি পদে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেই সময়ে মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে হাসপাতাল অনিয়ম-দুর্নীতির কালো ছায়া থেকে বাদ যায়নি কোথাও। এসব অনিয়ম নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থার একটি তদন্ত প্রতিবেদন এসেছে দুদকে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের এপ্রিলে বিশ্ব ব্যাংক ও বাংলাদেশ যৌথভাবে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ৬০০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে। এতে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক থেকেও অতিরিক্ত ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা পায়।

তবে তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, মাস্ক-পিপিই, হাসপাতালের সরাঞ্জমাদি, সচেতনতায় বিজ্ঞাপন ও অ্যাপ নির্মাণে ঠিকাদারি কাজ দেয়ায় তৎকালীন স্বাস্থ্য অধিপ্তরের পরিচালক ও পিডি ডাক্তার ইকবাল কবির পদে পদে নানা অনিয়ম করেন। কাজ পাওয়া ৬ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের প্রমাণও মিলেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত।

অধ্যাপক ডা. ইকবাল কবির বলেন, ‘আমি তো তখন থেকেই ওএসডি হয়ে আছি। তাই ওইসব বিষয়ে কথা বলার মতো মুডে আমি নেই।’

তথ্য বলছে, গাড়ি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জাদিদ অটোমোবাইল পায় মাস্ক-পিপিই সরবরাহের কাজ। অনৈতিকভাবে কাজ পেয়ে সরবরাহ করে নিম্ন মানের সরাঞ্জমাদি। একইভাবে পিডির স্ত্রীর কোম্পানিকে ২৯ হাজার ৫০০ ডলার দেয় আরেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এছাড়া কাজ শেষের অগে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ, পিডির পরিচিত প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়াসহ নানা অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। যদিও এসব নিয়ে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান নিজেদের নির্দোষ দাবি করছে, কোনো প্রতিষ্ঠানের আবার পূর্বের ঠিকানায় হদিস মেলেনি।

এ অবস্থায় তদন্ত প্রতিবেদনকে আমলে নিয়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে দুদককে পরামর্শ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসেন।

তিনি বলেন, এই তথ্যগুলোকে এখনই আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু না করলে বিদেশি সাহায্যগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।

আর স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিটরা বলছেন, শুধু স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা নয়, এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন তৎকালীন মন্ত্রীসহ অন্যরাও।

স্বাস্থ্য আন্দোলন বিষয়ক কমিটির সভাপতি মাহবুব-ই- রশীদ বলেন, সব কিছুরই মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে। সেখানে হয়ত তাদের অদক্ষতা অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে জিনিসটা করা হয়নি। পিডিকে দায়ী করা হচ্ছে। কিন্তু পিডি তো সরকারের অংশ। পিডির উপরেও তো লোক আছে।

করোনাকালে মাস্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় জেএমআই গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক, যদিও পরবর্তীকালে আসামিদের অব্যাহতি দেয় সংস্থাটি।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.