সেঞ্চুরির মালা গাঁথলেন নাঈম
৫ ওভারে বাউন্ডারি মোটে একটি। রান স্রেফ ১১। ১০ ওভার শেষেও রান স্পর্শ করল না ৩০। মনে হচ্ছিল, আরেকটি ‘টিপিক্যাল’ মোহাম্মদ নাঈম শেখ ইনিংস। তিনি তো এভাবেই ব্যাট করেন, ইনিংস গড়েন এবং বেশির ভাগ সময় পুষিয়ে দিতে না পেরে আউট হয়ে যান। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম । পরের সময়টায় যে নাঈমকে দেখা গেল, চেনা নাঈমের সঙ্গে তাকে মেলানো কঠিন।
বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে চার-ছক্কার ফুল দিয়ে সেঞ্চুরির মালা গাঁথলেন নাঈম। বিপিএলে প্রথম সেঞ্চুরিতে আসরের রানের তালিকায়ও সবার ওরে উঠে গেলেন খুলনা টাইগার্সের বাঁহাতি ওপেনার। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ইনিংস শুরু করতে নেমে গোটা ২০ ওভার খেলে যখন অপরাজিত হয়ে তিনি ফিরছেন, নামের পাশে তখন জ্বলজ্বল করছে ৭ চার ও ৮ ছক্কায় ৬২ বলে অপরাজিত ১১১।
নাঈমের এই সেঞ্চুরিতে বড় আশার রসদ পেল খুলনা টাইগার্স। প্লে-অফের লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে বাকি দুটি ম্যাচে জয় ছাড়া উপায় নেই তাদের। এমন ম্যাচে ২০ ওভারে তারা তুলেছে ২২০ রান। মিরপুরে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রংপুর রাইডার্সকে ৪৬ রানে হারিয়েছে খুলনা।
আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২২০ রান তোলে খুলনা। জবাবে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭৪ রানে থামে রংপুর।
বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় ১১ রানে প্রথম উইকেট হারায় রংপুর। ৯ রান করের নাসুম আহমেদের শিকার হন তাওফিক খান। দ্রুত বিদায় নেন সাইফ হাসানও। ৬ রানে রান আউট হন তিনি। এরপর হাল ধরার চেষ্টা করেন সৌম্য সরকার ও ইফতিখার আহমেদ। তবে, ৩৬ রানের জুটি ভাঙে ১৫ বলে ১৯ করে ইফতিখার সাজঘরে ফিরলে।
শেখ মেহেদি চেষ্টা করেছিলেন রানের গতি বাড়াতে। তবে সমান দুটি করে চার ও ছক্কায় ১৪ বলে ২৭ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। বাকিদের ক্রমাগত ব্যর্থতায় একদিকে একা হয়ে পড়েন সৌম্য। নবম ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফেরার আগে তিনি চেষ্টা করেছিলেন। ৬টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৪৮ বলে ৭৪ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন সৌম্য। এটি কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। খুলনার পক্ষে মুশফিক হাসান তিনটি ও মোহাম্মদ নাওয়াজ নেন ২ উইকেট।
টানা আট জয়ে উড়তে থাকা রংপুর গ্রুপ পর্ব শেষ করেছে টানা চার হার দিয়ে। ১২ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে। আজকের জয়ে ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে খুলনা উঠে এসেছে তিন নম্বরে।
এর আগে, ব্যাটিংয়ে দলকে ভালো শুরু এনে দেন খুলনা অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। ওপেনিংয়ে নেমে ১২ বলে ২১ রানের দ্রুতগতির ইনিংস খেলেন তিনি। তাকে বিদায় করেন শেখ মেহেদি। ১৪ বলে ১২ রান করে রানআউট হন অ্যালেক্স রস। এরপর উইলিয়াম বোসিস্তোকে নিয়ে জুটি গড়েন আরেক ওপেনার নাঈম শেখ। দুজন মিলে তোলেন ৮৮ রান।
দলীয় ১৪৮ রানে বোসিস্তোর উইকেট হারায় খুলনা। ২১ বলে তিনটি চার ও ২ ছক্কায় ৩৬ রান করেন বোসিস্তো। সাজঘরে ফেরেন আকিফ জাভেদের শিকার হয়ে। তবে, খুলনার রানের চাকা সচল রাখেন নাঈম। রংপুরের বোলারদের কাঁদিয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। ৭টি চার ও ৮টি ছক্কায় ৬২ বলে ১১১ রানে অপরাজিত থাকেন নাঈম। তাকে সঙ্গ দিয়ে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন করেন ১৪ বলে ২৯ রান। চতুর্থ উইকেট জুটিতে দুজনে মিলে যোগ করেন ৭০ রান।’