সিনহার বিরুদ্ধে প্লট দুর্নীতি মামলা, প্রতিবেদন ২৩ নভেম্বর

ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্লট বরাদ্দ, অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অর্থপাচারের অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৩ নভেম্বর ধার্য করেছেন আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে মামলার এজাহার আসে। আদালত তা গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের এই দিন ধার্য করেন।

আজ রবিবার (১০ অক্টোবর) সকালে দুদকের আদালত নিবন্ধন শাখা থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

গত বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) দুদক উপপরিচালক মো. গুলশান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

দুদক সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ওইদিন নতুন মামলার বিষয়ে জানিয়েছিলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা তাঁর নিজ নামে রাজউক থেকে উত্তরা আবাসিক এলাকায় একটি প্লট বরাদ্দ পান। পরবর্তী সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁর ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহার নামে রাজউক পূর্বাচল প্রকল্পে তিন কাঠার প্লটের জন্য আবেদন করেন এবং বরাদ্দ নেন। পরে তিন কাঠার প্লটটিকে প্রভাব খাটিয়ে পাঁচ কাঠার প্লটে রূপান্তর করেন। এরপর আবারও নিজ ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে পূর্বাচল থেকে প্লট স্থানান্তর করে উত্তরা সেক্টর ৪, রোড নম্বর ৬, বাড়ি নম্বর ১/এ প্লটটি রাজউক থেকে অনুমোদন করান। এস কে সিনহা নিজেই ওই প্লটের মোট মূল্য ৭৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেন এবং সেখানে ৯ তলা ভবন নির্মাণ করেন।

দুদকের অনুসন্ধানের তথ্য থেকে আরো জানা যায়, রাজউককে প্লটটির মূল্য পরিশোধ করা ছাড়াও ওই ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ছয় কোটি ৩১ লাখ পাঁচ হাজার ৮৬৫ টাকা। সে হিসাবে প্লটটির মূল্য পরিশোধ এবং ভবন নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে সাত কোটি ছয় লাখ ৮৬৫ টাকা। এই ব্যয়ের মধ্যে শুধু জনৈক খালেদ চৌধুরীর কাছ থেকে ফ্ল্যাট বিক্রির অগ্রিম বাবদ ৭০ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। আর শংখজিৎ সিংহ নামের ব্যাংক হিসাবে স্থায়ী ও নগদে জমা আছে ৭৮ লাখ টাকা।

দুদকের অনুসন্ধান বলছে, এসব হিসাব অনুসারে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা সাত কোটি ১৪ লাখ পাঁচ হাজার ৮৬৫ টাকা অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে নিজের ভাই ও অন্য আত্মীয়ের নামে ও বেনামে অর্জন করেছেন। এই সম্পদ অর্জনের কোনো বৈধ উৎস নেই এবং এটি তাঁর জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, এই অর্থ সম্পদ বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দুর্নীতি দমন আইনের বিভিন্ন ধারা ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২-এর ৪ (২), (৩) ধারায় অপরাধ করেছেন। দুদকের অনুমোদনের পর সংস্থার  উপপরিচালক মো. গুলশান এই মামলা করেছেন।

চার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে এস কে সিনহার বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা রয়েছে দুদকের। এই মামলার রায় ঘোষণার তারিখ রাখা হয়েছে আগামী ২১ অক্টোবর।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.