সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের দাবি নিয়ে সংস্কার হবে: তারেক রহমান
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, সংস্কার কার্যক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া। জনগণের সমর্থন ও রায় নিয়ে বিএনপির নেতৃবৃন্দ এই সংস্কার কার্যক্রম শুরু করবে। জনমানুষের যে প্রশ্ন, যে চাওয়া, তার সাথে একটি মহলের চাওয়ার অমিল রয়েছে। তবে বিএনপি সফল একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের দাবি-দাওয়া নিয়ে সংস্কার কার্যক্রম চালানো হবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে পঞ্চগড়ের পৌরসভা চত্বরে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি প্রশিক্ষণ কর্মশালা’ শেষে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। একইসাথে দলীয় কার্যক্রম গতিশীল করতে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। এর আগে দলের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে পঞ্চগড় জেলার সাধারণ মানুষের চাওয়া পাওয়ার কথা শুনে উত্তর দেন তিনি। এর আগে সকাল থেকে দিনব্যাপী এই কর্মশালায় জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
তারেক রহমান বলেন, অনেকে অনেক কিছু বলতে পারে। আজকে সারাদিন কর্মশালায় এ বিষয়ে কথা বলেছেন। কমিটমেন্ট আছে, আমাদের প্রতিজ্ঞা দৃঢ়। লিমিটেশন থাকতে পারে, একজন মানুষের একটা নিয়ত থাকতে পারে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সে শতভাগ সফল হতে নাও পারে। কিন্তু আমাদের নিয়ত পরিষ্কার। আমরা যা মানুষের সামনে বলেছি; তাই করব ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশের একটি প্রধান দল হিসেবে আমরা শুরু করব; এরপর আমাদের পরবর্তী জেনারেশন ও নেতাকর্মীরা তা চালিয়ে নিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আগেই বলেছি সংস্কার এমন একটি বিষয় যা চলমান। একটি সময়ের মধ্যে যদি কিছু একটা করা হয় সেটা সংস্কার হতে পারে না। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা তা শুরু করব। যারা নেত্রীবৃন্দ আছেন; তারা জনগণের সমর্থন ও রায় নিয়ে শুরু করবেন। কারণ একটি রাজনৈতিক দলের ওপর বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ নির্ভর করে; বিশ্বাস করে এবং আস্থা রাখে। সেরকম একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে কার্যক্রম চালাতে চাই। এর আগে আমরা ধারাবাহিকভাবে সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি এবং ধারাবাহিকভাবে সংস্কার করেছি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আমরা চাই দেশের সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে। আমাদের মাঝে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। গণতন্ত্রে মতপার্থক্য থাকাটাই স্বাভাবিক। কোনোভাবেই যাতে গণতন্ত্রের উত্তরণ মানুষের ভোটের অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার বাধাগ্রস্ত না করে। কারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ও রাজনৈতিক অধিকার যদি বাধাগ্রস্ত হয়; তাহলে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, বিগত ১৫ বছর জনগণের সেই রাজনৈতিক অধিকার, এককথায় ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তার ফলশ্রুতিতে আমরা দেখেছি, বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। চিকিৎসা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। সমাজে বিভিন্ন অধঃপতন ও বিভিন্ন অনাচার শুরু হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাব পড়েছে। আমরা সুযোগ পেলে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করব। একইসাথে আমরা যে সংগ্রামে রাজপথে নেমেছিলাম বিগত ১৫ বছর ধরে; যেই সংগ্রামের জন্য আমাদের বহুনেতা গুম-খুনের শিকার হয়েছে। অনেকে পঙ্গুত্ববরণ করেছে তাদের এই বলিদান কোনোভাবে বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। পৃথিবীর কোনো দেশে যুদ্ধ না হলে শিশু হত্যা হয় না। কিন্তু জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আমরা দেখেছি সেই পলাতক স্বৈরাচারের নির্বিচার অত্যাচারের কারণে এদেশে শতাধিক শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। তাই বলতে চাই আমরা ৩১ দফা বাস্তবায়ন করব। একইসাথে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং তার প্রতিটি নেতাকর্মী আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।

Comments are closed.