সব মাথাব্যথা বিপজ্জনক না হলেও সতর্ক হওয়া জরুরি, জানালেন চিকিৎসক

মাথাব্যথা নিয়ে অনেকেই ভাবনায় থাকেন। বিশেষ করে যাদের নিয়মিত মাথাব্যথা হয় তাদের অনেকেই এটাকে বিপজ্জনক ভাবেন। কারণ কখনো কখনো মাথাব্যথা এমন স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে যা চিকিৎসার প্রয়োজন। তবে সব সময় এটা ভাবনার কারণ নয়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে ভারতীয় ডা. মণিশা মিশ্রা গোস্বামী এ বিষয়ে কথা বলেছেন।

ডা. মণিশা মিশ্রা বলেন, প্রতিটি রোগ বা অসুস্থতা, এমনকি মাথাব্যথাও বিভিন্ন বিষয় ইঙ্গিত করে। অনেক সময় এটা আমাদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করার সংকেত দেয়। তাই এই বিষয়গুলো জানা জরুরি। সেই সঙ্গে অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস যেস্মন অতিরিক্ত খাবার খাওয়া, ধূমপান এবং অতিরিক্ত তেলযুক্ত ও ভাজা খাবার এড়ানো আবশ্যক।

কখন মাথাব্যথা ভয়াবহ কিছুর ইঙ্গিত দেয়: দিল্লির বীরলা হসপিটালের মেডিসিনের চিকিৎসক ডা. রাজীব গুপ্ত জানান, অতিরিক্ত গরম বা পরিবেশগত চাপ শরীরে  দেহে পানির ঘাটতি এবং ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য বিঘ্নিত করতে পারে, যা মাথাব্যথার পরিচিত কারণ। হালকা মাথাব্যথা সাধারণভাবে চিন্তার বিষয় নয়, কিন্তু প্রতিদিন মাথাব্যথা হওয়া উদ্বেগের কারণ।

তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, যখন আমাদের শরীর ঘামে তরল হারায়, এটি মস্তিষ্কসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফাংশনের জন্য অপরিহার্য ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্যকে বিঘ্নিত করে। এই অসামঞ্জস্য থ্রোবিং বা পীড়াদায়ক মাথাব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। তীব্র গরম এবং মানসিক চাপ শুধু হাইড্রেশনে প্রভাব ফেলে না; এটি রক্তনালীর উপরও প্রভাব ফেলে। ডা. গুপ্ত বলেন, গরমে মস্তিষ্কের রক্তনালী প্রসারিত হয়, যা মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। ধরুন, আপনার মস্তিষ্ক হলো জটিল পাইপের একটি নেটওয়ার্ক। যখন এই পাইপগুলি অতিরিক্ত প্রসারিত হয়, তখন ব্যথা অনুভূত হয়।

 

প্রতিরোধের উপায়: ডা. গুপ্ত গরমের কারণে মাথাব্যথা প্রতিরোধ ও উপশমের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন:
  • হাইড্রেশন গুরুত্বপূর্ণ: সারাদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন। পানি সবচেয়ে ভালো, তবে ইলেকট্রোলাইটযুক্ত পানীয়ও সহায়ক হতে পারে।
  • ছায়ায় থাকুন ও শরীর ঠান্ডা রাখুন: সরাসরি রোদে দীর্ঘ সময় কাটানো এড়ান। ছায়ায় থাকুন, এয়ার কন্ডিশন বা পাখা ব্যবহার করুন।
  • পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম: ঠিকমতো ঘুম এবং বিশ্রাম শরীরকে গরম চাপ মোকাবেলায় সক্ষম করে।
  • ডিহাইড্রেটিং ড্রিঙ্ক এড়ান: অতিরিক্ত অ্যালকোহল ও ক্যাফিন এড়িয়ে চলুন।
  • চোখ রক্ষা করুন: সানগ্লাস ব্যবহার করে আলো থেকে চোখ রক্ষা করুন, যা চোখের চাপ কমাতে সাহায্য করে।

মাথাব্যথা অনেক সময় সাধারণ ক্লান্তি বা মানসিক চাপে ঘটে, তবে প্রতিদিনের বা তীব্র মাথাব্যথা কখনও অবহেলা করা উচিত নয়। এটি শরীরের ভেতরে লুকিয়ে থাকা বড় কোনো সমস্যার ইঙ্গিতও হতে পারে। তাই নিজের শরীরের সংকেতগুলিকে গুরুত্ব দিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও ঘুম বজায় রাখুন, এবং প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

You might also like

Comments are closed.