সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি মির্জা ফখরুলের
অবিলম্বে জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠনসহ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শুক্রবার (৬ আগস্ট) বিকেলে দলের আয়োজনে শিক্ষা বিষয়ক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি জানান।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, করোনার সময়ে যে ক্ষতিটা হয়েছে তা মারাত্মকভাবে শিক্ষা, অর্থনীতি, রাজনীতিসহ আমাদের ভবিষ্যতকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। এজন্য শিক্ষাবিদ, অভিভাবক, শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি জাতীয় কমিশন করে অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিকল্পনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া প্রয়োজন। শিফট করে, নতুন ক্যারিকুলাম প্রণয়ন করে শিগগিরই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করতে হবে।
বিএনপির উদ্যোগে ‘কভিড-১৯ বিপর্যস্ত শিক্ষা ব্যবস্থা-সরকারের সিদ্ধান্তহীনতায় মহাসংকটে জাতির ভবিষ্যৎ’- শীর্ষক এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় দীর্ঘ চার ঘন্টারও বেশি সময়ের এই ভার্চুয়াল আলোচনায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিহউল্লাহ, অধ্যাপক কামরুল হাসান, এএনএম মাহিদ উদ্দিন ভুঁইয়া, অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক হোসনে আরা বেগম, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া বক্তব্য দেন।
ভার্চুয়াল আলোচনায় ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা। এটা শিক্ষার চরম ক্ষতি। আগামী ২০ বছর এই ক্ষতি আমাদেরকে নিয়েই আমাদের এগুতে হবে। শ্রেণির শিক্ষার কোনো বিকল্প নাই। অনলাইনের মাধ্যমে যে শিক্ষার পাঠদান করার চেষ্টা করা হচ্ছে আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, এটাতে ফলাফল ভালো নয়। সেই অতিদ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া উচিত। যেখানে সবকিছু খোলা, কলকারখানা খোলা, দোকানপাট খোলা সেখানে আর কোনো যুক্তি নাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা।
অধ্যাপক কামরুল হাসান এবং এএনএম মাহিদ উদ্দিন ভুঁইয়া দীর্ঘ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভাবনা ও সমস্যাগুলো তুলে ধরে বলেন, এভাবে যদি একটা শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালিত হয় এবং এভাবে যদি আমাদের অভিভাবকরা সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিষয়ে তাহলে ভবিষ্যতে আমরা যাদের পাবো তারা কিভাবে দেশ পরিচালনা করবেন সেটা ভাবতেই শরীর শিউরিয়ে উঠে। ঘরবন্দি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে, মোবাইল, ট্যাব, ভিডিও গেইমসে আসক্ত হচ্ছে, শিশু শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি অমনোযোগী ও তাদের পড়াশুনার প্রতি অনীহা চলে এসেছে।