সংসদে ধর্ষণ বা ধর্ষণচেষ্টা সংক্রান্ত আইন পাস
জাতীয় সংসদে ধর্ষণ বা ধর্ষণচেষ্টা সংক্রান্ত নতুন আইন পাস হয়েছে। পাস হওয়া আইনের বিধান অনুযায়ী, আদালতের অনুমতি ছাড়া ধর্ষণ বা ধর্ষণচেষ্টা মামলায় জেরার সময় ভুক্তভোগীকে চরিত্র ও অতীত যৌন আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না। নতুন আইনে বিচারকাজে বিভিন্ন ডিজিটাল তথ্যকেও সাক্ষ্য হিসেবে উপস্থাপনের সুযোগ রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে ‘এভিডেন্স অ্যাক্ট ১৮৭২ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২২’ পাস হয়। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি পাসের জন্য সংসদে উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
এর আগে স্পিকার বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে প্রেরণ এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করেন।
এ সময় সংসদে বিএনপিসহ বিরোধী দলের বেশির ভাগ সদস্যই আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ার প্রশংসা করেন। তবে এর কোনো কোনো ধারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েলে ব্যবহার হতে পারে বলে আশঙ্কা করেন বিএনপির দুই সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ ও রুমিন ফারহানা। তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার হচ্ছে অভিযোগ করে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন।
জবাবে বিরোধী দলের আশঙ্কা উড়িয়ে দেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিরেধী দলকে টার্গেট করেই করা হয়েছে বলে এখানে অভিযোগ করা হয়েছে। আমি অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, এই অভিযোগ সত্য নয়।’ তবে কেউ কেউ আইনটি অপব্যবহার করেন বলে স্বীকার করেন তিনি।
পাস হওয়া বিলে ব্রিটিশ আমলের সাক্ষ্য আইনের সংশোধনী এনে নতুন ধারা যুক্ত করা হয়। এই সংশোধনী পাস হওয়াও বিদ্যমান সাক্ষ্য আইনের ১৫৫(৪) ধারা বাতিল হয়েছে। ওই ধারায় বলা হয়েছে, ধর্ষণ বা ধর্ষণচেষ্টা মামলার ভিকটিমকে তার নৈতিক চরিত্র বা অতীত যৌন আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না। ন্যায়বিচারের স্বার্থে যদি আদালত মনে করেন এ ধরনের প্রশ্ন করা প্রয়োজন, তাহলে আদালতের অনুমতি নিয়েই কেবল করা যাবে।
এ ছাড়া সাক্ষ্য আইনের বিভিন্ন ধারা সংশোধন ও নতুন ধারা যুক্ত করে মামলার বিচারে ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনেরও সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কেউ যাতে ভুয়া বা জাল সাক্ষ্য-প্রমাণ ডিজিটাল মাধ্যমে হাজির করতে না পারে, আদালত যদি মনে করেন কোথাও আপত্তিজনক কিছু আছে অথবা কেউ যদি আপত্তি তোলে, তাহলে ওই সাক্ষ্য-প্রমাণের ফরেনসিক পরীক্ষা করা যাবে।