সংবাদপত্রের পাতা থেকে…

জানা অজানা অগণিত তথ্য দিয়ে সাজানো সংবাদপত্রের পাতা। এ সবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তথ্য মনে দাগ কাটলেও, অনেকগুলোই দৃষ্টির অগোচরে থেকে যায়। আবার প্রথম পাতার সব শিরোনামও সবার পড়ার সুযোগ হয়না। মাল্টিনিউজের পাঠকদের জন্য এবার সেই অয়োজন সংবাদপত্রের পাতা থেকে। চলুন আজ
সোমবার (১৭ মার্চ) কোন সংবাদপত্রের প্রধান শিরোনাম কী, তা জেনে নিই।

বণিক বার্তা: ‘শেখ মুজিবের ছবিসংবলিত নোট নিয়ে বিড়ম্বনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রমজান ও ঈদকে ঘিরে বাজারে নগদ টাকার চাহিদা বৃদ্ধি পায়। নতুন নোট ছেড়ে সে চাহিদা মেটায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

এবার শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসংবলিত নতুন নোট বাজারে ছাড়া নিয়ে বিড়ম্বনার মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

প্রথমে বলা হয়েছিল, ঈদ উপলক্ষ্যে পুরনো ডিজাইনের নতুন নোটই বাজারে ছাড়া হবে। যদিও পরে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে জানানো হয়, ব্যাংকের শাখায় থাকা নতুন নোটও বাজারে ছাড়া যাবে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ দ্বিধাদ্বন্দ্বের জেরে তৈরি হয়েছে নগদ টাকার সংকট। দেশের অনেক জেলায় ব্যাংকগুলো চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক থেকে নগদ টাকা পাচ্ছে না বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

তাই গতকাল রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে জরুরি প্রয়োজন মেটাতে অনেক ব্যাংক অন্য ব্যাংকের শাখা থেকে নগদ টাকা সংগ্রহ করে গ্রাহকদের প্রয়োজন মিটিয়েছে।

যদিও সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাজারে নগদ অর্থের কোনো সংকট নেই। নতুন নোট ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে পর্যাপ্ত পুরনো নোট রয়েছে। পুরনো নোটগুলোই চাহিদা অনুযায়ী বাজারে ছাড়া হচ্ছে।

কোনো জেলায় যদি সংকট তৈরিও হয়, সেটি ভুল বোঝাবুঝি থেকে সৃষ্টি হতে পারে।

সমকাল: ‘ চালের ভরপুর জোগান, তবু লাফিয়ে বাড়ছে দাম ‘

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বন্যায় চাষাবাদে ধাক্কা খেলেও এবার আমন উৎপাদন হয়েছে ভরপুর, আমদানিও হচ্ছে লাখ লাখ টন চাল। আগামী এপ্রিলের শেষ দিকে বাজারে ঢুকবে বোরো। তার পরও এখন রেকর্ড ছুঁই ছুঁই করছে সরু চালের দাম। ভালোমানের এ জাতের চালের কেজি সর্বোচ্চ ৮৫ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। বেড়েছে মোটা ও মাঝারি চালের দরও।

প্রতিবছর রোজায় শাকসবিজ, মাছ-মাংসসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। এবার এসব পণ্যের দর অনেকটা ক্রেতার নাগালে। কোনো কোনো পণ্যের দাম এতটাই কম, কৃষকের উৎপাদন খরচও উঠছে না। অথচ উল্টো পথে চালের বাজার।

ভোক্তা-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাল সিন্ডিকেটের ভিত নড়াতে পারেনি সরকার। বাজারে বড় মিলারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে সিটি, প্রাণ, স্কয়ার, আকিজ, এসিআইর মতো বড় বড় কোম্পানি। তারা মৌসুমের সময় কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনে মজুত করে। কৃষকের হাতে সামান্য যে ধান থাকে সেগুলোর মজুত ফুরালে শুরু হয় করপোরেট ও মজুতদারের খেলা। এর পর বাজার চলে যায় তাদের নিয়ন্ত্রণে। সংকটসহ নানা ছুতায় ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকে দর। এভাবেই কৃষকের ধান নিয়ে ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণার জাল ফেলেন সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। এতে বেশি বিপদে পড়েছেন মধ্যবিত্তরা।

খুচরা ব্যবসায়ীদের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, মিলার এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে চালের বাজার অস্থির হচ্ছে। তারা ধানের সংকট বললেও চালের ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুযায়ী চালও মিলছে। তবে অজানা কারণে দাম বেশি নিচ্ছে। তারা বলছেন, সাধারণত রোজায় চালের চাহিদা কম থাকে। ফলে বাজার স্বাভাবিক থাকার কথা। তবে বাজারে নেই সুবাতাস। ধান সংকটের অজুহাতে বাড়ছে দর।

বরাবরের মতো মিলাররা দায় চাপাচ্ছেন ছোট ব্যবসায়ীর ওপর। তাদের দাবি, মিল পর্যায়ে দর কমছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা করার কারণে বাজার চড়েছে। যদিও মিলারদের তথ্য বলছে, পাইকারি মোকামে চালের বাড়তি দর দেখা গেছে।

গতকাল রোববার ঢাকার কারওয়ান বাজার, মগবাজারসহ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি গুটিস্বর্ণা বা মোটা চাল ৫৪ থেকে ৫৫, পাইজাম চাল ৫৫ থেকে ৫৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে এসব চাল দুই-এক টাকা কমে কেনা গেছে। বিআর-২৮ জাত বা মাঝারি চালের কেজি গত সপ্তাহের চেয়ে দুই থেকে তিন টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৪ থেকে ৬৫ টাকায়। তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সরু বা মিনিকেট জাতের চালের দর। বর্তমানে এ জাতের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা দরে। গত সপ্তাহে এ ধরনের চালের কেজি ছিল ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা। সে হিসাবে এক সপ্তাহে সরু চাল কেজিতে বেড়েছে সর্বোচ্চ ৭ টাকা।

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, বাজারে গত এক বছরে মিনিকেট চালের দর বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। মাঝারি চালের প্রায় ১৪ এবং মোট চালের ৫ শতাংশ দর বেড়েছে।

নিউএইজ: ‘আবরার হত্যা মামলায় ছাত্রলীগের সাবেক ২০ নেতার মৃত্যুদণ্ড বহাল’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া ২০ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত খবর দেশের সংবাদপত্রগুলো গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে আজ।

হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চ ডেথ রেফারেন্স অনুমোদন ও আসামিদের করা আপিল খারিজ করে গতকাল রোববার এই রায় দেন।

দণ্ডাদেশ বহাল থাকা আসামিরা সবাই ‘নিষিদ্ধঘোষিত’ ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার নেতাকর্মী।

আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর আসামিরা বুয়েটের শেরে-ই-বাংলা হলে আবরার ফাহাদকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করে। হলটিতেই থাকতেন আবরার ফাহাদ।

সে সময় ভারতের সাথে আওয়ামী লীগ সরকারের চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে আবরার ফাহাদের সমালোচনা এবং ছাত্র শিবিরের সাথে সম্পৃক্ততার সন্দেহে তাকে নির্মম নির্যাতন করা হয়। যদিও বুয়েটের এই শিক্ষার্থী বারবার শিবিরের সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছিলেন।

এই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২০ আসামির মধ্যে চারজন পলাতক। যার মধ্যে একজন পাঁচ অগাস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে যায়।

প্রতিদিনের সংবাদ: ‘২০ আসামির মৃত্যুদণ্ড, ৫ জনের যাবজ্জীবন’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বহুল আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২০ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া ৫ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। গতকাল রবিবার বেলা ১১টায় বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আসাদুজ্জামান রায় পড়ে শোনান। রায়ের পর আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, রায়ে তারা আপাতত সন্তুষ্ট। তবে এ রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।

হাইকোর্টের রায়ের পর কুষ্টিয়া শহরের নিজ বাসভবনে আবরারের মা রোকেয়া খাতুন বলেন, হাইকোর্টেও আগের রায় বহাল থাকায় আমরা সবাই খুশি। তিনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে দীর্ঘ ছয় বছর ধরে দেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন। কেউ আমাদের কাছ থেকে দূরে সরে যাননি। এ জন্য আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এখন একটাই চাওয়া, রায় যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর হয়। এ রায় কার্যকর হলে ভবিষ্যতে এমন কাজ করতে আর কেউ সাহস পাবে না। সেই সাথে দেশের সকল উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে যেনো এমন প্রাণঘাতি রাজনীতি না থাকে সেই অনুরোধ করছি।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছেন- বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিই বিভাগ, ১৩তম ব্যাচ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার অপু (মেকানিক্যাল ইঞ্জনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির (ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ), সদস্য মোজাহিদুর রহমান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাজেদুর রহমান মাজেদ (এমএমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), খন্দকার তাবাক্কারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল, ১৭তম ব্যাচ), মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), এস এম নাজমুস সাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মিজানুর রহমান (ওয়াটার রিসোসের্স, ১৬ ব্যাচ), শামছুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), উপদপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল) এবং এস এম মাহামুদ সেতু (কেমিকৌশল)।

কালের কণ্ঠ: ‘চালে অস্বস্তি, অন্য পণ্যে স্বস্তি’

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে কিছুটা লাগাম টানা গেছে গত মাসে। টমেটো, আলু, পেঁয়াজ, শাক-সবজিসহ বেশিরভাগ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নাগালের মধ্যে রয়েছে।

এই আত্মতৃপ্তির মধ্যে কেবল নীরবে উত্তাপ ছড়াচ্ছে চালের দাম।

বিশেষ করে ‘মিনিকেট’ (চিকন চাল) হিসেবে পরিচিত চালের দাম এক লাফে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তাতে অত্যাবশ্যক এই নিত্যপণ্যের দামের এ নৈরাজ্য নতুন করে মূল্যস্ফীতি উসকে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করছে।

মিনিকেটের পাশাপাশি মোটা চালের দামও কেজিতে নতুন করে এক-দুই টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।

তারা বলছেন, গত দুই সপ্তাহেই মিল পর্যায়ে মিনিকেট চালের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এর প্রভাবে খুচরা ও পাইকারিতে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

চালকল মালিকদের দাবি, বাজারে মিনিকেট চালের ধানের সংকটের কারণে বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে চালের দাম বেড়েছে।

আজকের পত্রিকা: ‘সংস্কার ও ভোট প্রশ্নে ছাড় দিচ্ছে না কেউ’

এ খবরে বলা হচ্ছে, দেশের সংবিধান-রাজনীতিসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত কমিশনগুলোর কয়েকটি ইতোমধ্যে অনেকগুলো প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু অনেক বিষয়ে প্রধান দলগুলোর অবস্থানে বেশ ফারাক লক্ষ করা যাচ্ছে।

সরকারের দিক থেকে ঐকমত্য কমিশন করে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে এই মতৈক্য ঘোচানোর চেষ্টা চলছে। তারপরও অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, দলগুলো নিজেদের অবস্থান থেকে সরতে নারাজ।

দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি শুরু থেকেই বলে আসছে, সংস্কার নিয়ে তাদের আপত্তি নেই। সংস্কার অবশ্যই দরকার। তবে দেশকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফেরাতে ন্যূনতম যে সংস্কার দরকার, তা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায় দলটি।

বিএনপির এই মতের সঙ্গে মিল নেই তাদের একসময়ের মিত্র জামায়াতে ইসলামীর। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলছে দলটি।

এমনকি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন চেয়েছেন জামায়াতের নেতারা। দলটির এই দাবির প্রকাশ্য বিরোধিতা করেছেন বিএনপির নেতারা।

অন্য দিকে, সরকার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বরাবরই সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা এ অবস্থানে অনড় থেকে জাতীয় নির্বাচনের আগে সংস্কারপ্রক্রিয়া শেষ করার পক্ষে মত দিয়ে যাচ্ছেন।

সর্বশেষ গত শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকের আলোচনার মূল বিষয়বস্তুই ছিল সংস্কার। সেই আলোচনার পরেও সংস্কার প্রশ্নে নিজ নিজ অবস্থানে অনড় রয়েছে দলগুলো।

দেশ রূপান্তর: ‘ঈদের পর ফের উত্তপ্ত হবে রাজনীতির মাঠ’

এতে বলা হয়েছে, সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি। জামায়াত প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন আর এনসিপি চায় গণপরিষদ নির্বাচন।

এ নিয়ে মাঠের কর্মসূচিতে রাজনীতির অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে ঈদের পরে।

নির্বাচন ইস্যুতে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। ঈদের পর দলটি তৃণমূলে রাজনৈতিক কর্মসূচি বাড়াবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক দলের সূত্রগুলো বলছে, ঈদের পর রাজনীতির মাঠে মুখোমুখি হবে দলগুলো। এর মধ্যে সংস্কার ইস্যুতে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির বিরোধপূর্ণ কর্মসূচি থাকতে পারে।

এসব দলের মাঠে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। বিএনপির ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হলো,

অভ্যন্তরীণ কোন্দল সামাল দিয়ে দুর্বল সাংগঠনিক কাঠামোকে সবল করা।

জামায়াতও তৃণমূলে নিজেদের পুনর্গঠিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বিএনপির দুর্বলতাগুলো কাজে লাগিয়ে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো ও নতুন ভোটার আকৃষ্ট করার চেষ্টা করবে।

এনসিপি নতুন হলেও এরই মধ্যে তারা তৃণমূলে কমিটি করেছে। দলটি মূলত জাতীয়তাবাদী ও রক্ষণশীল রাজনৈতিক দর্শনের ওপর ভিত্তি করে সংগঠন বিস্তার করছে।

তরুণ ও নতুন ভোটারদের পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াতের ওপর ক্ষুব্ধদের দলে টানা ও সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করার লক্ষ্য এনসিপির।

প্রথম আলো: ‘ডিসি হতে কর্মকর্তাদের আগ্রহ হঠাৎ কমেছে’

এতে বলা হচ্ছে, বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে নিয়োগ পেতে আগে যেখানে ব্যাপক আগ্রহ থাকত, তদবিরও হতো, সেখানে এখন ডাক পেয়েও সাক্ষাৎকার দিতে যাচ্ছেন না প্রায় অর্ধেক সংখ্যক কর্মকর্তা।

ডিসি নিয়োগে এখন পর্যন্ত দুইটি ব্যাচের ২৬৯ কর্মকর্তাকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডেকেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু সাক্ষাৎকার দিতে গেছেন ১৩৬ জন।

অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দিকেও ডিসি হতে বেশ কিছু কর্মকর্তা বিক্ষোভ ও হট্টগোল করেছিলেন। কিন্তু সেই পদে আসতে কর্মকর্তাদের আগ্রহে এখন ভাটা কেন?

কারণ জানতে সাক্ষাৎকারে ডাক পাওয়া অন্তত ১০ কর্মকর্তা গণমাধ্যমটির কাছে মোটাদাগে পাঁচটি কারণ তুলে ধরেছেন।

প্রথমত, বিগত তিন বিতর্কিত নির্বাচনের সময়ে ডিসি পদে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তারা এখন জবাবদিহির মুখে পড়ছেন। এখন ডিসি হলে আগামী নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে। কোনো না কোনো সময় তাদের সমস্যায় পড়তে হতে পারে।

দ্বিতীয়ত, মাঠ প্রশাসনের পরিস্থিতিকে এখন ডিসি পদে দায়িত্ব পালনের উপযোগী মনে করছেন না অনেকে।

তৃতীয়ত, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে ডিসি পদে দায়িত্ব পালনকারীদের পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার কী চোখে দেখবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে কারও কারও।

চতুর্থত, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ভালো পদে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তারা নিজে থেকেই সাক্ষাৎকার দিতে যাওয়া থেকে বিরত থাকছেন। তারা মনে করছেন, তাদের ডিসি নিয়োগ করা হবে না।

পঞ্চমত, এখন অনিয়ম-দুর্নীতির সামান্য অভিযোগ উঠলে সরকারের শাস্তিমূলক ব্যবস্থার মুখে পড়তে হবে। ঝুঁকি নিয়ে ডিসি পদে গেলেও ক্ষমতার চর্চা করা কঠিন হবে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.