শুষ্ক আবহাওয়ার ফলে ভয়াবহ পানিসংকটে ইংল্যান্ড
ইংল্যান্ডে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাস সবচেয়ে শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে এনভায়রোমেন্ট এজেন্সি (ইএ)। দেশটিতে ১৯৭৬ সালের পর থেকে এ ধরণের শুষ্ক আবহাওয়া দেখা যায়নি। এ কারণে দেশটির পানি সংকটকে ‘জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ইএ জানিয়েছে, ইংল্যান্ডের ১৪টি পরিচালনা অঞ্চলের মধ্যে পাঁচটিতে খরা পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এছাড়া আরো ছয়টি অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে পানি সরবরাহ হ্রাস ও ফসলের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
ইংল্যান্ডের কিছু অংশে গ্রীষ্মে চতুর্থবারের মতো দাবদাহের সম্ভাবনা থাকায় সরকার, কৃষি প্রতিনিধি ও পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত ন্যাশনাল ড্রট গ্রুপ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈঠক করেছে।
ইএর পানি বিষয়ক পরিচালক হেলেন ওয়েকহ্যাম বলেছেন, ‘আমরা সবাইকে এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে ও পানি পরিবেশের ওপর চাপ কমানোর আহ্বান জানিয়েছি।’
ন্যাশনাল ফার্মার্স ইউনিয়নের সহসভাপতি র্যাচেল হ্যালোস বলেন, ‘কৃষকরা অত্যন্ত শুষ্ক পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ায় আগামী মাসগুলো নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ রয়েছে।
কিছু খামারে ফলনের উল্লেখযোগ্য হ্রাস দেখা যাচ্ছে। যা আর্থিকভাবে ক্ষতিকর ও যুক্তরাজ্যের সামগ্রিক ফসল উৎপাদনেও প্রভাব ফেলতে পারে।’
ইএর তথ্য অনুযায়ী, আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ইংল্যান্ডের জলাধারগুলো গড়ে ৬৭.৭ শতাংশ পূর্ণ ছিল। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে গড়ে ৮০.৫ শতাংশ পূর্ণ থাকে।
এ ছাড়া ৪৯ শতাংশ নদীর প্রবাহ স্বাভাবিকের নিচে নেমে গেছে। ইংল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলীয় ইয়র্কশায়ারে হোসপাইপ ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মেট অফিসের তথ্য মতে, ২০২৫ সালের বসন্ত ছিল ইংল্যান্ডের গত ১০০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে শুষ্ক।
পানি বিষয়ক মন্ত্রী এমা হারডি বলেছেন, ‘আগামী দশকে আমরা ক্রমবর্ধমান পানি সংকটের মুখোমুখি হব। সরকার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে নতুন জলাধার নির্মাণের পরিকল্পনা করছে।
’
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, মানুষের কারণে সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন বন্যা, তাপপ্রবাহ ও খরার মতো চরম আবহাওয়ার ঘটনাকে আরো তীব্র ও ঘন ঘন করে তুলছে।
সূত্র : এএফপি

Comments are closed.