শিশু নুসরাত ধর্ষণ-হত্যায় ফাঁসির আদেশ আসামির

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের চাঞ্চল্যকর শিশু নুশরাত জাহান নিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি শাহ আলম রুবেলের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ সিরোজুদ্দৌলাহ কুতুবী এ রায় দেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবুল বাশার রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আসামির রুবেল রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় আদালত তার এক লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। অভিযুক্ত অপর আসামি বোরহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়।

এদিকে, রায়ের পর আদালতপাড়ায় অপেক্ষমান মামলার বাদী নুসরাতের মা রেহানা বেগম ও চাচা আকবর হোসেন রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন।

আদালত ও এজাহার সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ২৩ মার্চ দুপুরে নুশরাত জাহান নিখোঁজ হন। পরদিন তার মামা জিয়া উদ্দিন রামগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তিনদিন পর ২৬ মার্চ সকালে উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপাড়ায় খালে বস্তাবন্দি শিশুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রাতেই নিহতের মা রেহানা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে রামগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহত নুশরাত উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের প্রবাসী এরশাদ হোসেনের মেয়ে ও পশ্চিম নোয়াগাঁও গ্রামের ফয়েজে রাসুল নুরানী মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল। নুশরাতকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে আলামত পেয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।

এদিকে মামলার তদন্তে মাধ্যমে ধর্ষণের পর নুসরাতকে হত্যার ঘটনায় ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল প্রধান আসামি রুবেল ও তার সহযোগী বোরহানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তখন পুলিশের কাছে রুবেলের জবানবন্দিতে জানা যায়, ২৩ মার্চ দুপুরে আইসক্রিম খাওয়া ও টিভি দেখার কথা বলে রুবেল তার বাসায় নুসরাতকে ডেকে নেয়। এ সময় তাকে (নুসরাত) জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ ছট দিয়ে বেঁধে রুবেল তার ঘরের স্টিলের আলমিরার ওপর লুকিয়ে রাখেন। দুদিন পর সেখান থেকে মরদেহ বস্তাবন্দি করে রাতের অন্ধকারে সিএনজি চালিত অটোরিকশাযোগে বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে নিয়ে ব্রিজের নিচে ফেলে দেন। নুসরাত সম্পর্কে তার ভাতিজি ছিল। পরে তদন্তে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড প্রমাণিত হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। দীর্ঘ শুনানি শেষে ও ১৩ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণের পর আদালত এ রায় দেন।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.