লাটভিয়াকে হুমকি দিলেন পুতিন

ডয়চে ভেলে

লাটভিয়ায় রুশ সংখ্যালঘুদের প্রতি অন্যায় আচরণের অভিযোগ তুলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়েছেন। ফলে ইউক্রেনের পর ন্যাটোর সদস্য এই দেশ রাশিয়ার রোষের মুখে পড়বে কিনা, সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অনেক প্রজাতন্ত্রেই ঐতিহাসিক কারণে রুশ জনগোষ্ঠী সংখ্যালঘু সম্প্রদায় রয়েছে। ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণে সেই রুশ জনগোষ্ঠীর প্রতি অবিচারের অভিযোগ তুলে রাশিয়া গত দশক থেকে ইউক্রেনের উপর চাপ বাড়িয়ে চলেছে। ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া-সহ সে দেশের অনেক জমি বেদখল করেছে মস্কো। ২০২২ সালে শুরু হওয়া হামলা এখনো চলছে। এবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বাল্টিক অঞ্চলের দেশ লাটভিয়ায় রুশ সংখ্যালঘুদের প্রতি অন্যায়ের অভিযোগ তোলায় দুশ্চিন্তা বাড়ছে।

উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর সদস্য সেই দেশে রুশ সংখ্যালঘু মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৮ লাখ। অর্থাৎ প্রতি চার জনের মধ্যে একজনেরই রাশিয়ায় শিকড় রয়েছে। তবে অনেকেরই লাটভিয়ার নাগরিকত্ব নেই।

সোমবার মস্কোয় পুতিন বলেন, যারা এমন নীতি গ্রহণ করছে তারা সুখের মুখ দেখবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন না। তার মতে, যারা জনসংখ্যার একাংশের প্রতি ‘শুকরের মতো আচরণ’ করে সেই নীতি তাদের বিরুদ্ধে গেলে বিস্ময়ের কারণ থাকা উচিত নয়। সংবাদ সংস্থা টাস-এর সূত্র অনুযায়ী রাশিয়ার মানবাধিকার পরিষদে পুতিন এই বক্তব্য রাখেন। সেই পরিষদে লাটভিয়ার রুশ জনগোষ্ঠীর জন্য আইন পরিবর্তনের বিষয়ে আলোচনা চলছে।

যে সব দেশ রুশদের প্রতি বৈষম্য দেখাচ্ছে, তাদের সঙ্গে সম্পর্কে রদবদলেরও হুমকি দিয়েছেন পুতিন। তিনি বলেন, তারা ঐতিহাসিক বাসভূমিতে ফিরতে চাইলে রাশিয়া প্রয়োজনীয় পরিবেশ সৃষ্টি করবে। তবে পুতিন স্বীকার করেন, রুশ বংশোদ্ভূত মানুষকে দেশছাড়া করলে রাশিয়ার কিছু করণীয় নেই।

ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা শুরু হবার পর থেকে লাটভিয়ার সরকার নাগরিক নয় এমন মানুষের জন্য ভাষার পরীক্ষা চালু করেছে। তাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজ চালানোর মতো ভাষাজ্ঞান আছে কিনা, সেটা জানতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। অন্যথায় রেসিডেন্স পারমিট বাতিল করার আশঙ্কাও রয়েছে।

লটাভিয়ার প্রতি পুতিনের প্রচ্ছন্ন হুমকি শেষ পর্যন্ত সশস্ত্র সংঘাতে পরিণত হবে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে। ন্যাটোর সদস্য দেশ হিসেবে সে দেশ আক্রান্ত হলে বাকি সদস্যরাও সুরক্ষার জন্য এগিয়ে আসতে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ। ইউক্রেনের পাশাপাশি নতুন একটি দেশে হামলা চালানোর জন্য যথেষ্ট সামরিক ক্ষমতা রাশিয়ার আছে কিনা, সে বিষয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে।

তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাল্টিক অঞ্চলের দেশগুলির কড়া অবস্থান সম্প্রতি নজর কেড়েছে। সম্প্রতি ওএসসিই সম্মেলনে রাশিয়াকে আমন্ত্রণ জানানোয় এস্টোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়েনিয়া সম্মেলনে যোগ দেয় নি।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.