রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় নীতিমালা কেন নয়, রুল
আদালতে সাজাপ্রাপ্তদের ক্ষমা করতে রাষ্ট্রপতিকে কোনো নীতিমালা ছাড়াই যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তার বৈধতা নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রুলে আদালত জানতে চেয়েছেন, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগে নীতিমালা প্রণয়নের জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সংসদ ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার (৩ মার্চ) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই রুল জারি করেন।
গত ২০ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান দণ্ডিত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এই রিট আবেদন করেন।
আইনজীবী ইশরাত আবেদনে বলেন, সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা বর্তমানে অনিয়ন্ত্রিত এবং ইচ্ছাধীন।
তিনি বলেন, কীভাবে এবং কোন ভিত্তিতে ক্ষমা করা হয়, সে বিষয়ে কোনো নীতিমালা না থাকায় এটি সংবিধানের ৭, ২৭, ৩১ এবং ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রিট আবেদনকারী আরও উল্লেখ করেন, এই ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। তিনি সাবেক সেনাপ্রধানের ভাই জোসেফ এবং আসলাম ফকিরের মতো দণ্ডিত আসামীদের ক্ষমা করার উদাহরণ দেন।
আবেদনকারী বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতার চরম অপব্যবহার করা হয়েছে। পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে, অবাধে বিপুল সংখ্যক দণ্ডিত ব্যক্তিকে ক্ষমা করা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই হত্যায় অভিযুক্ত। এর ফলে জনগণের মধ্যে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা কমেছে। ক্ষমতার এই অবাধ ব্যবহার রোধ করতে আদালতের মাধ্যমে নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরি।’
আদালতে আবেদনকারী ইশরাত হাসান নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মহসিন কবির।