রাজনীতিতে নতুন আলোচনায় গণপরিষদ নির্বাচন

৫৩ বছর পর রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনায় স্থান পেয়েছে গণপরিষদ নির্বাচন। তবে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতির মাঠে আছে দ্বিধাবিভক্তি। পক্ষে-বিপক্ষে চলছে নানা আলোচনা। নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি পক্ষে থাকলেও যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিএনপি।

অবশ্য স্বাধীন বাংলাদেশে গণপরিষদ বিষয়টি কিন্তু নতুন নয়। মূলত সংবিধান রচনা করতে যে কমিটি গঠন করা হয় তাকে গণপরিষদ বলে। দেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে তা একবারই গঠিত হয়েছিলো ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ। ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক ও জাতীয় নির্বাচনে জয়ী প্রতিনিধিরা ছিলেন এর সদস্য।

বর্তমানে গণপরিষদ ইস্যু নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত ৫ আগস্টের পর সংবিধান পরিবর্তনের দাবি থেকেই। ২৮ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের দিন জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকেও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি তোলা হয়।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম এ বিষয়ে বলেন, রাজনৈতিক ঐক্যমত হলে, নির্বাচিত কিংবা অনির্বাচিত- দু প্রক্রিয়াতেই গঠন করা যায় এটি।

জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গেও গণপরিষদ নির্বাচনও হতে পারে বলে দাবি এনসিপির। যার এজেন্ডা নির্ধারিত হবে জুলাই ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতে।

দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার এ বিষয়ে বলেন, আমরা বলেছি যে, সামনের নির্বাচনটা হতে হবে গণপরিষদ কাম আইনসভা নির্বাচন, যেখানে এক নির্বাচনের মধ্যে দিয়েই আপনি দুটো করবেন।

সারোয়ার তুষার আরও বলেন, যারা নির্বাচিত হবেন তারা সংবিধান প্রণয়ন করবেন। এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তারা গণভোট করবে, আশা করা যায় জনগণ এ বিষয়ে সহায়তা করবে। এর পরেই নির্বাচিতরা নিজেদের পার্লামেন্ট হিসেবে ঘোষণা করবেন। এটা হচ্ছে আমাদের রোডম্যাপ। এর আগে গণপরিষদের বিতর্কের জন্যে কয়েকটি এজেন্ডা ঠিক করতে হবে।

তবে প্রথম থেকেই গণপরিষদের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন আছে বিএনপির। বিদ্যমান ব্যবস্থাতেই আস্থা রাখতে চায় দলটি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গণপরিষদের নয় এটি জাতীয় সংসদের কাজ। আমাদের আগে থেকেই একটি সংবিধান আছে, যেটাতে আমরা পুরোপুরি একমত নই, কিন্তু আমাদের হাতে আছে। এই সংবিধান অনুসারেই সরকার গঠন করা হয়েছে এবং সংবিধান মেনেই রাষ্ট্র পরিচালনা হচ্ছে। এতে কোনো দ্বিমত নেই। সুতরাং ঐক্যমত অনুসারে এই সংবিধানকেই সংশোধন করে গ্রহণ করতে হবে।

এদিকে সারোয়ার তুষার বলেন, বিএনপি যদি বলে নির্বাচিত সংসদের অধীনে এটা করবে তবে সেটা হয় না। আমি মনে করি যখন বৈঠকে বসা হবে তখন যৌক্তিক দিক বিবেচনায় তারা এটাতে রাজি হবে, এখানে তাদের ভয়ের কিছু নেই। এমন না যা গণপরিষদ নির্বাচন হলে আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাব, সংসদ নির্বাচন হলে তারা পাবে। ব্যাপারটা এমন না।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.