রাজধানীর প্রধান সড়কে চলবে না ব্যাটারিচালিত রিকশা
চাহিদার তুলনায় গণপরিবহনের স্বল্পতার সুযোগে কারিগরিভাবে ত্রুটিপূর্ণ তিন চাকার ব্যাটারি ও ইঞ্জিনচালিত রিকশায় ঢাকাসহ সারা দেশ ছেয়ে গেছে। এসব যান বাড়তে দিয়ে এখন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না; বরং ত্রুটিপূর্ণ এই যানবাহনগুলো বাড়াচ্ছে ভোগান্তি, ঘটাচ্ছে দুর্ঘটনা।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও অন্য অবৈধ তিন চাকার যানবাহনের প্রকৃত হিসাব সরকারের কোনো দপ্তরেই নেই। তবে ২০১০ সালের দিকে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একাধিক বৈঠকে তিন চাকার অবৈধ যানের সংখ্যা ১০ লাখের মতো বলে উল্লেখ করা হয়। বিআরটিএ, যাত্রী অধিকার সংগঠন, পুলিশ ও অন্য অংশীজনের হিসাবে, ব্যাটারি ও যন্ত্রচালিত তিন চাকার অবৈধ যানবাহন এখন ৬০ লাখের বেশি। এর মধ্যে ঢাকার বাইরে আছে প্রায় ৫০ লাখ। আর ঢাকায় আছে ১০ লাখের মতো। কেউ কেউ মনে করেন, ব্যাটারি ও যন্ত্রচালিত রিকশার সংখ্যা ১৫ লাখের কম হবে না।
এই অবস্থায় যাত্রীবাহী বাস চলাচল করে, এমন সড়কসহ রাজধানীর প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকালে ডিএমপি সদর দপ্তরে ব্যাটারিচালিত রিকশা মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা কিছু ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করলেও সমস্যা সৃষ্টি করছে। পুলিশকে এসব সমস্যার সমাধান করতে হবে। বাস চলাচল করে, এমন সড়কসহ মূল সড়কে যেন এসব ব্যাটারিচালিত রিকশা না চলে, সে জন্য মালিক-শ্রমিক সবাইকে নির্দেশ দেন তিনি।
ঢাকা মহানগরের পুলিশের প্রধান বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলমান। প্রস্তাবিত নীতিমালার আলোকে এখন থেকে কোনো ব্যক্তি একাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিক হতে পারবেন না।
পরিবহন খাতে সব শ্রেণির চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, কোনো ধরনের চাঁদাবাজি বরদাশত করা হবে না। পরিবহনের মালিক-শ্রমিক কেউ যেন কাউকে কোনো চাঁদা না দেন। কেউ চাঁদা দাবি করলে তা পাশের থানা বা পুলিশ ফাঁড়িতে জানানোর জন্য উপস্থিত সবাইকে অনুরোধ করেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। প্রস্তাবিত নীতিমালার আলোকে এখন থেকে কোনো ব্যক্তি একাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিক হতে পারবেন না। নীতিমালায় ‘যিনি চালক তিনি মালিক’ এ নীতিকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
সাজ্জাত আলী বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা কিছু ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করলেও অনেক সমস্যা সৃষ্টি করছে। আমাদের এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।
এ সময় অটোরিকশা মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা তাদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। সমস্যা সমাধানে ডিএমপি কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
মতবিনিময় সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার, ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম কমিশনার ও উপকমিশনার, ব্যাটারিচালিত রিকশা মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।