রাঙামাটির পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে ব্রকলির জাত উদ্ভাবন
পার্বত্য জেলা রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নে রয়েছে পাহাড়ি কৃষি গবেষণাকেন্দ্র। কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কৃষিজ ফসলের উন্নত জাত উদ্ভাবন ও চাষাবাদ পদ্ধতির ওপর গবেষণা করে আসছে। পাহাড়ি এলাকাসহ সারা দেশের কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে এই কৃষি গবেষণাকেন্দ্রটি।
কেন্দ্রের তথ্যমতে, পাহাড়ি কৃষি গবেষণাকেন্দ্রে কৃষি বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ প্রায় আট বছর গবেষণা করে ব্রকলির কয়েকটি উন্নত জাত উদ্ভাবনে সফল হন। তার মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ের পর একটি জাতকে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি ২০১৪ সালে বারি ব্রকলি-১ নামে কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদে ছাড়পত্র দেয়।
বারি ব্রকলি-১ অন্যান্য সফল হাইব্রিড ব্রকলি থেকে আলাদা। কারণ কৃষকরা এ ফসল সংগ্রহের পর মুক্ত পরাগায়নের মাধ্যমে বীজ উৎপাদন করতে পারেন। হাইব্রিড ব্রকলির ক্ষেত্রে সেটি সম্ভব নয়। হাইব্রিড ব্রকলির বীজ সংরক্ষণ করা যায় না। কিন্তু বারি ব্রকলি-১-এর বিক্রয়োপযোগী মূল পুষ্পমঞ্জুরি সংগ্রহ করার পর পাশে যে শাখাগুলো বের হয়, সেগুলোতে ফুল ফোটে এবং বীজ সংগ্রহ করা যায়। প্রতি হেক্টর জমি থেকে বীজ পাওয়া যায় প্রায় ৬০০ কেজির ওপরে।
গবেষণাকেন্দ্রটির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শ্যাম প্রসাদ চাকমা বলেন, ‘ব্রকলি দেখতে অনেকটা ফুলকপির মতো, তবে সবুজ রঙের হয়। এটি বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। পাহাড়িরা এই ব্রকলি সেদ্ধ করে খেয়ে থাকে। এছাড়া এটি ভাজি করে খাওয়া যায়। এটি একটি সুস্বাদু সবজি।’
তিনি জানান, বারি ব্রকলি-১-এর বীজ বপনের উপযুক্ত সময় মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর। চারা রোপণের ৫০ দিনের মাথায় পুষ্পমঞ্জুরি বের হওয়া শুরু হয়। ১৫ দিনের মাথায় সেটি খাদ্যপোযোগী হয়। বারি ব্রকলি-১-এর প্রতিটি বিক্রিযোগ্য পুষ্পমঞ্জুরির গড় ওজন প্রায় ৩০০-৪৫০ গ্রাম। মূল পুষ্পমঞ্জুরি সংগ্রহের পর যে পার্শ্বশাখা পুষ্পমঞ্জুরি বের হয় সেগুলোও সবজি হিসেবে খাওয়া যায় অথবা বীজ উৎপাদনের জন্য রাখা যায়। বেশ কয়েকজন কৃষক এই কেন্দ্র থেকে বীজ সংগ্রহ করে বারি ব্রকলি-১ চাষাবাদে সফলতা পাচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্রকলির বর্তমান বাজার দর ভালো। এ সবজি চাষে সফল চাষিরা। পরবর্তী সময়ও তারা বারি ব্রকলি-১ চাষের আশা প্রকাশ করেন।