রমজানে যানজট নিরসনে কাজ করবে শিক্ষার্থীরা

প্রতি বছর রমজানে অসহনীয় যানজটের কবলে পড়েন নগরবাসী। তাই আসন্ন রমজান মাসে ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তা করতে শিক্ষার্থীরা মাঠে নামবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, রোজার মাসে ঢাকার মানুষ যাতে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারে সেজন্য ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি স্কাউট এবং বিএনসিসির সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে। তাছাড়া বর্তমানে ট্রাফিক সহায়তায় থাকা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা হবে।

ডিএনসিসি নগর ভবনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সংগঠনের সভাপতি মতিন আব্দুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমন, সাবেক সহ-সভাপতি খালিদ সাইফুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ডিএমপির সঙ্গে সমন্বয় করে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ চলছে। এ লক্ষ্যে রোজার পর শহরের প্রধান সড়কে রিকশা বন্ধ করা হবে। মেট্রো স্টেশনের ৫০০ মিটারের ভেতর কোনো গাড়ি থাকবে না। যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য এরইমধ্যে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসি এলাকায় বর্তমানে ৫ শতাংশ খোলা জায়গা এবং ৩ শতাংশ জলাভূমি রয়েছে। আমার টার্গেট এটা অন্তত দ্বিগুণ করা। ঢাকা ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) অনুযায়ী ডিএনসিসি এলাকায় ৩৫টি খেলার মাঠ রয়েছে। যেগুলো সিটি করপোরেশনের মাঠের তালিকায় নেই। এগুলো দখলমুক্ত করব।

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, নগরীর ধুলা নিয়ন্ত্রণে নাগরিকদের সচেতন হতে হবে। শহরের কোথায় রাস্তার কাজ চলছে, কোথায় নির্মাণ কাজ চলছে সেই তথ্য আমরা পাচ্ছি না। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে যে পানি ছিটানো হচ্ছে, তা এখন থেকে জিপিএস ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ট্র্যাক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ধুলা নিয়ন্ত্রণে এখন থেকে দিনে তিনবার সড়কে পানি দেওয়া হবে। সকাল ৮টা, রাত ১০টা এবং বিকালে একবার।

তিনি আরও বলেন, যারা ঝাড়ু দেয় তাদের বেতন খুবই সামান্য, যে কারণে ঝাড়ু দেওয়ার কাজে নানা ফাঁকফোঁকর রয়েছে। তারা যেন পুরো বেতনটা পায় সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে কাজের মান বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম নিয়ে মোহাম্মদ এজাজ বলেন, অভিযোগ আছে ঠিকমত সব এলাকায় মশার ওষুধ ছিটানো হয় না। এ জন্য ফগিং মেশিনে ট্র্যাকার দেব। রোজার আগেই মশার ওষুধ ল্যাবে পরীক্ষা করিয়ে মান যাচাই করার উদ্যোগ নিয়েছি। এরপর কর্মকর্তাদের নিয়ে বসে করণীয় ঠিক করব।

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ডেঙ্গু একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মশা নিধনের পরিকল্পনার পাশাপাশি আমরা ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য ডিএনসিসি ডেডিকেটেড ডেঙ্গু হাসপাতাল প্রস্তুত করছি। এখানে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হবে। জনস্বাস্থ্য নিয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে চাই না।

ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, সিটি করপোরেশনে জনবল সংকট রয়েছে। ঢাকা ওয়াসা থেকে খাল হস্তান্তর করা হলেও কোনো জনবল দেওয়া হয়নি, দু’টি ভাঙ্গা ট্রাক দেওয়া হয়েছে। সড়ক বাতি মেরামত করার জনবলও নেই। বিষয়গুলো মন্ত্রণালয়কে আমরা জানিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট রয়েছে। ঈদের পর এগুলো ভেঙে নতুন মার্কেট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। দুর্ঘটনা রোধে এরইমধ্যে রেস্টুরেন্টগুলো ফায়ার সেফটি নিশ্চিতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ফুটপাত ও জলাশয় দখলমুক্ত করাসহ উন্নয়নকাজে কমিউনিটি যুক্ত করার মডেল তৈরি করছি। যার মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.