রংপুরের হাড়িভাঙা আমের অপার সম্ভাবনা
আমের উদ্ভব এশিয়া মহাদেশে হলেও বর্তমানে বিশ্বজুড়ে আমের চাহিদা রয়েছে। বিশ্ব বাজারের প্রতিনিয়ত নতুন প্রজাতির আম দেখা যাচ্ছে। তেমনি হাড়িভাঙা একটি নতুন প্রজাতির আম।
আনুমানিক অর্ধ শতাব্দী আগে এই আম গাছের চাড়া রোপণ করেছিলেন নফলউদ্দিন পাইকার নামে এক বৃক্ষপ্রেমী। তার হাতে রোপণ করা গাছটি আজও রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার তেকানী গ্রামে রয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে গাছটি সরকারিভাবে সংরক্ষণের দাবিও গণমাধ্যমে এসেছে।
মাঘ এবং ফাল্গুন মাসে হাড়িভাঙা আমগাছে মুকুল আসে। জানা যায় চলতি বছর রংপুর জেলায় ৩ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে রয়েছে এই গাছ। সুস্বাদু এ আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৪ হাজার টন, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা।
রংপুরের প্রতিটি উপজেলায় কমবেশি এ জাতের আম পাওয়া যায়। প্রতি বছর কয়েকশ মেট্রিক টন আম দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাতকরণ করা হয় এবং বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। প্রতি বছর ২০ জুনের পর থেকে এ আম বাজারে আসে। হাড়িভাঙা আমের বৈশিষ্ট্য হলো এটি আঁশবিহীন এবং সুস্বাদু। সাধারণত দেখতে গোলাকৃতির এবং কালচে সবুজ রংয়ের, পাকলে নিচের অংশ সামান্য হলুদে রং ধারণ করে। প্রতিটির ওজন ১৫০-৪০০ গ্রাম পর্যন্ত। খোসা কুঁচকে যায় তবু পচে না। ছোট থেকে পাকা পর্যন্ত স্তরের স্বাদের তারতম্য আছে।
এই আম ‘রংপুরের নতুন অর্থকরী ফসল’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। অপার সম্ভাবনাময় হাড়িভাঙা আম চাষ এবং আমশিল্প সচল রাখার স্বার্থে সরকারের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে আমচাষী ও ব্যবসায়ীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ, সময়মত প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান এবং বাজারজাতকরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করার সাথে বাস্তবায়নে রূপরেখা প্রদান করা প্রয়োজন।