যে দোয়া সবচেয়ে ভারী হবে কেয়ামতের দিন
কেয়ামতের দিন মানুষ কবর থেকে পুনরায় জীবন লাভ করে হাশরের মাঠে জমায়েত হবে। তখন তাদের অবয়ব হবে খুবই দীর্ঘ। ফলে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পিপাসায় কাতর হয়ে পড়বে অনেকে। তাদের অন্তরজুড়ে ভয়ভীতি বিরাজ করবে। কারণ আল্লাহর হিসাব গ্রহণ ও প্রতিদান সম্পর্কে তারা সন্ত্রস্ত থাকবে।
তখন রসুলুল্লাহ (স.) আল্লাহ তাআলার কাছে দ্রুত পুরো সৃষ্টিজগতের হিসাব গ্রহণের সুপারিশ করবেন। দীর্ঘ এক হাদিসে এই বিষয়ে বর্ণিত হয়েছে।
এরপর মানুষের আমল উপস্থাপন করা হবে। পরে প্রাথমিক পর্যায়ে হিসাব নেওয়া শুরু হবে। আমলনামা দেওয়া হবে। সব ধরনের আমল ওজন করা হবে। এর পর মানুষ বিভিন্ন দলে বিভক্ত হবে। মুমিনদের আল্লাহ পথ চলার আলো দেবেন। মুনাফিকদের জন্য কোনো আলো থাকবে না। তারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হয়ে কাফেরদের সঙ্গে বসবাস করবে।
কেয়ামতের এমন কঠিন দিনে একটি দোয়ার ওজন সবচেয়ে ভারী হবে বলে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে। রসুলুল্লাহ (সা.) উম্মতকে অসংখ্য দোয়া ও আমল শিখিয়েছেন। বিভিন্ন সময় তিনি এমনকিছু আমলের কথা বলেছেন যা আকারে খুবই কম ও সংক্ষিপ্ত হলেও এর সওয়াব অনেক বেশি। এটি তেমনই একটি দোয়া।
سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ، وَرِضَا نَفْسِهِ وَزِنَةَ عَرْشِهِ، وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ
উচ্চারণ: সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি আদাদা খালকিহি, ওয়ারিদা নাফসিহি, ওয়াজিনাতা আরশিহি, ওয়ামিদাদা কালিমাতিহি।
অর্থ: আমি আল্লাহ তাআলার পবিত্রতা ও প্রশংসা বর্ণনা করছি, তার সৃষ্টির সংখ্যা সমপরিমাণ, মহান সত্তার সন্তুষ্টির পরিমাণ, তার আরশের ওজন পরিমাণ এবং তার বাক্যগুলোর কালির পরিমাণ।
এ বিষয়ে উম্মুল মুমিনিন হজরত জুয়াইরিয়াহ বিনতে হারেস (রা.) থেকে এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভোরে ফজরের নামাজ শেষ করে তার থেকে বাইরে গেলেন। আর তিনি (জুয়াইরিয়াহ) নিজ জায়নামাজে বসেই রইলেন।
তারপর চাশতের সময় তিনি যখন ফিরে এলেন, তখনও তিনি সেখানেই বসেছিলেন। এ দেখে নবীজি (স.) তাকে বললেন, আমি যে অবস্থায় তোমাকে ছেড়ে বাইরে গেলাম, সে অবস্থাতেই তুমি রয়েছ? তিনি বললেন, হ্যাঁ।’ নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার কাছ থেকে যাওয়ার পর আমি চারটি বাক্য তিনবার পড়েছি। যদি সেগুলিকে তোমার সকাল থেকে এ যাবৎ পঠিত দোয়ার সঙ্গে ওজন করা হয়, তাহলে তা আমার পড়া দোয়ার ওজনের সমান হয়ে যাবে। (মুসলিম ৭০৮৮)