যেখান-সেখান দিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া যাবে না : ডিএমপি কমিশনার

পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। নিরাপত্তার স্বার্থে এ বছর যেখান-সেখান থেকে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া যাবে না বলে নির্দেশনা দেন তিনি।

রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুরের দিকে রমনা বটমূলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনের শেষে শেখ মো. সাজ্জাত আলী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ‘নববর্ষের শোভাযাত্রাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর, বাংলা একাডেমি ও টিএসসি হয়ে পুনরায় চারুকলায় গিয়ে শেষ হবে। শোভাযাত্রার পুরো রুট নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে। পাশ থেকে বিকল্প পথে শোভাযাত্রায় প্রবেশ করা যাবে না।’

সাজ্জাত আলী জানান, শোভাযাত্রায় যোগদান করতে হলে শাহবাগ মোড় থেকে যোগ দিতে হবে। আর ছায়ানটের অনুষ্ঠান শেষে যারা শোভাযাত্রায় অংশ নিতে চান— তারা শাহবাগ হয়ে কাঁটাবন মোড় দিয়ে নীলক্ষেত মোড় হয়ে ঢাবি ভিসির বাংলোর সামনে থেকে অংশ নেবেন।

ডিএমপি কমিশনার জানান, বৈশাখে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে ১৮ হাজার পুলিশ সদস্যসহ র‌্যাব, সেনাবাহিনী ও এন্টি-টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা দায়িত্বে থাকবেন।

বাংলা বর্ষবরণ উৎসবকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরকে ২১টি সেক্টরে ভাগ করে পর্যাপ্ত সংখ্যক ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়ন করা হবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাস্থলগুলো ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে। রমনা পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ মোট ২১টি স্থানে ব্যারিকেড থাকবে।

‘প্রতিটি অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশমুখে আর্চওয়ে ও হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করা হবে। অনুষ্ঠান স্থলে যাওয়া ও শোভাযাত্রার রোড সমূহ সিসি ক্যামেরাসহ স্থির ও ভিডিও ক্যামেরা দ্বারা ও ড্রোনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে। অনুষ্ঠানের চারপাশে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফুট পেট্রোল থাকবে। সিটিটিসি, সোয়াত ছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণে পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে,’ বলেন ডিএমপি কমিশনার। ইভটিজিং ও ছিনতাই প্রতিরোধে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ দল মোতায়েন থাকবে বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি। এ ছাড়াও রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অভ্যন্তরে ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টার’ স্থাপন থাকবে। সেখানে মাইকিং ব্যবস্থা থাকবে।

গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও সাইবার পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে নববর্ষকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চালানো অপপ্রচার বন্ধ করতে নজরদারি করা হচ্ছে বলে জানান মো. সাজ্জাত আলী।

এ সময় নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশি কাজে সহায়তা করতে এবং অনুষ্ঠানস্থলে কোন ধরনের ব্যাগ, ধারালো বস্তু ও দাহ্য পদার্থ না নিয়ে আসতে নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার।

ডিএমপি কমিশনার জানান, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে এবং অনুষ্ঠান স্থল ত্যাগ করতে হবে। কোনো ধরনের আতশবাজি, ফানুস উড়ানো যাবে না। শব্দ দূষণ হয়— এ ধরনের কোনো বাঁশি ব্যবহার করা যাবে না। বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের বাণিজ্যিক পণ্য বাজারজাত করা যাবে না। বিশেষ করে শোভাযাত্রায় ও অন্যান্য অনুষ্ঠানস্থলে।

ছায়ানটের অনুষ্ঠানে আসতে ইচ্ছুক নগরবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘যারা নারী ও শিশু সঙ্গে নিয়ে আসবেন তারা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ভীড় এড়িয়ে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করবেন। নারী ও শিশুদের জন্য নির্ধারিত গেট ব্যবহার করে বের হয়ে চলে যাবেন।’

ডিএমপি কমিশনার জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিনটি গেট দিয়ে প্রবেশ করা যাবে। সে সময় বের হওয়ার জন্যও তিনটি গেট ব্যবহার করা যাবে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত উদ্যানে প্রবেশ করা যাবে। বিকেল ৫টার পর প্রবেশ পথগুলোও বের হওয়ার পথ হিসেবে ব্যবহার করা হবে। শোভাযাত্রার সময় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পশ্চিম পাশে চারুকলার বিপরীতে যে গেট আছে সেটি বন্ধ থাকবে। ওই সময় কেউ ওই গেট দিয়ে রাস্তায়ও যেতে পারবেন না।

You might also like

Comments are closed.