যা এর আগে কোনও দিন হয়নি, তাই হতে চলেছে এ বারের যুব বিশ্বকাপ ফাইনালে। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালে প্রথম বারের জন্য মুখোমুখি হচ্ছে ভারত আর বাংলাদেশ।
এই নিয়ে টানা তিন বার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত। আর প্রথম ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার, পোচেস্ট্রুমে নিউজ়িল্যান্ডকে ছয় উইকেটে হারানোর পিছনে সব চেয়ে বড় ভূমিকা মাহমুদুল হাসান জয়ের। যিনি ১২৭ বলে ১০০ রান করে গেলেন। নিউজ়িল্যান্ডের ৮ উইকেটে ২১১ রান ৪৪.১ ওভারে তুলে দেয় বাংলাদেশ।
এই মুহূর্তে এশিয়ার দেশগুলোই যে বিশ্ব ক্রিকেট শাসন করছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আর কয়েক বছর ধরেই এশিয়ার অন্যতম শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে মাশরফি মর্তুজা, মুশফিকুর রহিম, শাকিব আল হাসানের বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে বেশ কয়েক বার দেখা গিয়েছে ভারত-বাংলাদেশ দ্বৈরথ। কিন্তু এ বার একেবারে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের মুকুটের জন্য লড়াই। যা অন্য মাত্রা দিচ্ছে রবিবারের কাপ ফাইনালকে। নিউজ়িল্যান্ডের রান টপকে বাংলাদেশ ফাইনালে উঠতেই ফেসবুক-টুইটারে ভেসে আসতে থাকে অভিনন্দনের বার্তা। বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম টুইট করেন, ‘‘অভিনন্দন ভাইয়েরা। মাথা ঠান্ডা রাখো। খুদে বাঘেরা মনে রেখো, আর একটা বড় ধাপ পেরনো বাকি।’’
নিউজ়িল্যান্ডকে হারানো মাত্র মাঠেই নাচতে শুরু করেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। তবে ম্যাচের পরে তাদের অধিনায়ক আকবর আলি শান্ত ভাবে বলেন, ‘‘আমরা জানি, ভারত খুব শক্তিশালী দল। ফাইনালে আমাদের নিজেদের সেরা খেলাটাই খেলতে হবে।’’ কিন্তু রবিবারের কথা ভেবে এখন থেকেই কি একটু উত্তেজনা হচ্ছে না? বাংলাদেশ অধিনায়কের জবাব, ‘‘আমরা আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই রবিবারের ম্যাচটা দেখছি। ফাইনাল বলে বাড়তি চাপ নিতে রাজি নই।’’
ভারত-পাকিস্তানের সেমিফাইনালের মতোই এ দিনের ম্যাচেও বেশি রান ওঠেনি। প্রথম সেমিফাইনালে ভারতের জয় এনে দিয়েছিল যশস্বী জয়সওয়ালের ব্যাট। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বাংলাদেশকে জেতাল মাহমুদুলের সেঞ্চুরি। ম্যাচ জিতিয়ে মাহমুদুল বলেন, ‘‘আমার কাজটা ছিল শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে যাওয়া। দুটো উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে আমি সেই লক্ষ্যে ব্যাট করে গিয়েছি। চেষ্টা করেছি, খুচরো রান নিয়ে স্কোর বাড়িয়ে যেতে।’’ এর আগে নিউজ়িল্যান্ড সফরে গিয়ে বড় রান করেছিলেন মাহমুদুল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলছেন, ‘‘ওই সফরে অনেক শিখেছি। যা ভুল করেছিলাম, এখানে করতে চাইনি।’’
পোচেস্ট্রুমে টস জেতার সুবিধেটাও কাজে লাগিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। শুরুর দিকে স্যাঁতসেঁতে পিচের সুবিধে নিয়েছেন তাঁরা। বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম ৪৫ রান দিয়ে তিন উইকেট তুলে নেন। নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়ক জেসি ট্যাশকফ বলেছেন, ‘‘আমরা একটা গুরুত্বপূর্ণ টস হেরেছি। তবে বাংলাদেশের বোলারদের কৃতিত্ব দিতেই হবে। ওরা ঠিক জায়গায় বলটা রেখে গিয়েছিল।’’
বাংলাদেশ অধিনায়ক বলে যান, ‘‘আমরা নিউজ়িল্যান্ড দলটাকে খুব ভাল করে চিনি। ওদের শক্তি-দুর্বলতা সম্পর্কে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল ছিলাম। সেই মতো কৌশল তৈরি করেছিলাম। যা কাজে দিল।’’
সংক্ষিপ্ত স্কোর: নিউজ়িল্যান্ড ২১১-৮ (হুইলার-গ্রিনাল অপরাজিত ৭৫, শরিফুল ইসলাম ৩-৪৫) বনাম বাংলাদেশ ২১৫-৪ (৪৪.১) (মাহমুদুল হাসান ১০০, তৌহিদ হৃদয় ৪০, শাহাদাত হোসেন অপরাজিত ৪০)।