যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গাজায় ইসরায়েলি হামলা, নিহত বেড়ে ৩৪২
গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া তীব্র ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪২ হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) এই তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ শুরুর পর দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। দ্বিতীয় ধাপের বাস্তবায়ন না করে হামাসকে প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়াতে বলে ইসরায়েল। তবে এই দাবি মেনে নেয়নি হামাস।
হামাসের অস্বীকৃতির শাস্তি হিসেবে ১৬ দিন গাজায় সব ধরনের পণ্য প্রবেশ বন্ধ রাখে নেতানিয়াহুর সরকার। এতেও কাজ না হওয়ায় দেশটি আবার গাজাবাসীর ওপর নির্বিচার হামলা শুরু করেছে।
তবে ইসরায়েলের দাবি, ‘হামাসের হামলার পরিকল্পনা জেনেই তারা আগে থেকে হামলা শুরু করেছে’। যথারীতি, এই দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দেয়নি ইসরায়েল।
মঙ্গলবারের হামলায় দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে অন্তত ৭৭ জন ও উত্তরের গাজা সিটিতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন বলে সূত্রদের কাছ থেকে জানতে পেরেছে আল জাজিরা।
পাশাপাশি, গাজার কেন্দ্রে দেইর আল-বালাহ ও দক্ষিণের রাফায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের অনেকেই শিশু।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীকে ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, কারণ হামাস যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে বা বাকি জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত
হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার ফলে ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেস্তে গেছে।
হামাস জানিয়েছে, নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্ত বাকি জিম্মিদের ‘মৃত্যুদণ্ড’ দেওয়ার সমতুল্য। ফিলিস্তিনি সংগঠনটি আরব ও ইসলামিক জাতিদের পাশাপাশি ‘সারা বিশ্বের মুক্ত মানুষদের’ পথে নেমে এসে এই বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান করেছে।
ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘জেনেবুঝে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ বানচালের’ অভিযোগ এনেছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট জানান, হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের ১৮ মাসের যুদ্ধ গাজার বেশিরভাগ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজাবাসীদের বাড়িঘর, স্কুল ও হাসপাতাল এখন ভাঙা পাথরের সন্নিবেশ ছাড়া আর কিছুই নয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।