যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্প ও মাস্কবিরোধী বিক্ষোভের ডাক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার ধনকুবের মিত্র ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সহস্রাধিক বিক্ষোভ মিছিলের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সরকার পরিচালনায় নতুন প্রশাসনের অতি রক্ষণশীল নীতির প্রতিবাদের স্থানীয় সময় শনিবার (৫ এপ্রিল) মাঠে নামতে যাচ্ছেন মার্কিনিরা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

বিক্ষোভ আয়োজনকারী একটি গোষ্ঠী, ইনডিভাইজিবল এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা আজরা লেভিন বলেছেন, ট্রাম্প, মাস্ক, রিপাবলিকান সমর্থক- যারাই তাদের মাগা (মেইক আমেরিকা গ্রেইট অ্যাগেইন) পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে, আজকের বিক্ষোভের মাধ্যমে তাদের সবার কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হবে। আমাদের গণতন্ত্র, সমাজ, শিক্ষাঙ্গন, বন্ধুবান্ধব ও পাড়াপ্রতিবেশিদের জীবনে ট্রাম্প প্রশাসনের হস্তক্ষেপ আমরা চাইনা।

উল্লেখ্য, মাগা হচ্ছে ট্রাম্পের একটি নির্বাচনি অঙ্গীকার। ট্রাম্প ও তার সদৃশ চিন্তাধারার মানুষদের কাছে আদর্শ আমেরিকার একটি রূপ আছে, যা ম্লান হয়ে গেছে বলে তারা বিশ্বাস করেন। তাদের সেই আদর্শ দেশ পুনরুদ্ধারের লড়াই হচ্ছে মাগা।

এই প্রতিবাদ কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘হ্যান্ডস অফ!’ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে মার্কিন পররাষ্ট্র ও জাতীয় নীতিতে নাটকীয় পরিবর্তন আনছেন ট্রাম্প, যা অসন্তুষ্ট করছে অনেককে। ফলে, তার বিরোধীরা এই বিক্ষোভ কর্মসূচির ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে।

বিক্ষোভের বিষয়ে ট্রাম্প বা মাস্কের বক্তব্য জানতে রয়টার্সের অনুরোধে হোয়াইট হাউজ থেকে কোনও সাড়া দেওয়া হয়নি।

তবে সংশ্লিষ্ট অন্য একটি প্রসঙ্গে ট্রাম্পের অবস্থান স্পষ্ট করার উদ্দেশে একটি ইমেইল দিয়েছেন হোয়াইট হাউজের সহকারী প্রেস সেক্রেটারি লিজ হিউসটন। তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অর্থায়ব বন্ধের অসত্য অভিযোগ তুলছেন বিক্ষোভকারীরা। প্রেসিডেন্টের অবস্থান বরাবরই স্পষ্ট- রাষ্ট্রীয় সুবিধা পাওয়ার যোগ্য মার্কিনিদের রক্ষায় সব কর্মসূচি বহাল থাকবে। কিন্তু ডেমোক্র্যাটরা যেভাবে সবকিছু পরিচালনা করেছেম তাতে অবৈধ অভিবাসী থেকে শুরু করে অনেক জালিয়াত এসব সামাজিক নিরাপত্তার অর্থ লুট করেছে। ট্রাম্প সেটা বন্ধ করবেন।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, প্রায় ১৫০টি কর্মী সংগঠন এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্য ছাড়াও কানাডা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, মেক্সিকো ও পর্তুগালে কর্মসূচি রয়েছে। ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল মলে অন্যতম বৃহৎ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গত ২০ জানুয়ারি প্রত্যাবর্তনের পর থেকেই নির্বাহী আদেশ এবং নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন ট্রাম্প। অনেকেই বলছেন, এসব উদ্যোগ ‘প্রজেক্ট ২০২৫’ নামে পরিচিত এক রক্ষণশীল পরিকল্পনার সঙ্গে মিল রয়েছে, যার লক্ষ্য হলো সরকার কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন এনে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা। ট্রাম্পের সমর্থকেরা অবশ্য এই পদক্ষেপগুলোকে সাহসী বলে প্রশংসা করছেন। তাদের বিশ্বাস, এর মাধ্যমে পুরনো উদারনৈতিক স্বার্থগোষ্ঠীর আধিপত্য ভাঙা সম্ভব।

অবশ্য, সরকারি কর্মীদের বরখাস্ত কর্মসূচি, অভিবাসী বিতাড়ন এবং ট্রান্সজেন্ডার অধিকারসহ একাধিক ইস্যুতে তার নির্বাহী আদেশ আদালতের হস্তক্ষেপে পুরোপুরি কার্যকর হতে পারেনি। এসব মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, বিভিন্ন ইস্যুতে নিজের এখতিয়ারের বাইরে ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন ট্রাম্প।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.