মোদির সঙ্গে টিভি বিতর্ক করতে চান ইমরান
ভারত ও পাকিস্তান যেসব বিষয়ে মতবিরোধে লিপ্ত তা সমাধানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিভিশনে বিতর্ক করতে চান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পারমাণবিক শক্তিধর এই দুটি দেশ ৭৫ বছর আগে স্বাধীনতা অর্জনের পর তিনটি যুদ্ধ করেছে। তাদের মধ্যে সবসময়ই সম্পর্কে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। অনেক ইস্যুতে দেশ দুটির মধ্যে দা-কুমড়ো সম্পর্ক চলছে। সমস্যার সমাধান হতে হতে, আবার মাঝে মাঝেই যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে এ দুটি দেশ।
ইমরান খান রাশিয়া টুডে’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, টেলিভিশনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিতর্ক করতে পছন্দ করি আমি। ইমরান খান আরও বলেন, যদি এই বিতর্কের মধ্য দিয়ে মতবিরোধের সমাধান করা যায়, তাহলে ভারত উপমহাদেশের শত কোটিরও বেশি মানুষের উপকার হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।
এতে বলা হয়েছে, ইমরান খানের ওই মন্তব্যের জন্য ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে সম্প্রতি কয়েকবার পাকিস্তানকে ভারত এটা পরিষ্কার করেছে যে, সন্ত্রাস এবং আলোচনা হাতে হাত ধরে চলতে পারে না। তাই সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে দমনপীড়ন চালাতে এবং সন্ত্রাসীদের শাস্তি দিতে পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানায় ভারত।
আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধ করুক পাকিস্তান- এটা চায় ভারত। তবে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসের জন্য পাকিস্তান বিরাষ্ট্রীয় ব্যক্তিদের দায়ী করেছে। ভারতের দাবি এরা পাকিস্তানে এবং কাশ্মীরে বেআইনিভাবে দখল করে রাখা এলাকার ভিতরে অবাধে বসবাস করে, অপারেশন চালায়।
সম্প্রতি পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী রাজ্জাক দাউদও ইমরান খানের মতো একই রকম মন্তব্য করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যকে সমর্থন করেন তিনি। এতে উভয় পক্ষই উপকৃত হবে। এ জন্য পর্দার আড়ালে কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে বলে দাবি করেন তিনি। ইমরান খান বলেছেন, আঞ্চলিক বাণিজ্যে পাকিস্তানের জন্য সুযোগ এরই মধ্যে সীমিত, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আছে ইরানে এবং আফগানিস্তান কয়েক দশক ধরে যুদ্ধে লিপ্ত।
চীনের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলেছে পাকিস্তান। দেশটিতে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পসহ বিভিন্ন অবকাঠামো বিষয়ক প্রকল্পে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। রোড অ্যান্ড ইনিশিয়েটিভের অংশবিশেষ অতিক্রম করবে পাকিস্তান দখলীকৃত কাশ্মীরের ভিতর দিয়ে। এসব নিয়ে যখন মতবিরোধ দেখা দিয়েছে তখন মস্কো সফরের প্রাক্কালে ওই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ইমরান খান। এই সফরে তিনি সাক্ষাত করবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে। ফলে দুই দশকের মধ্যে প্রথম পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি রাশিয়া সফর করছেন। দু’দিনের এই সফরে অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে তাদের। এই আলোচ্যসূচি নির্ধারণ করা হয়েছে ইউক্রেনের বর্তমান সঙ্কটের আগে। এই সঙ্কট নিয়ে ইমরান খান বলেন, এটা আমাদের উদ্বেগের বিষয় নয়। রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আছে। আমরা এই সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে চাই।