মেসিকে নিয়ে ভারতের একশ কোটির ব্যবসা!
ভারত মেসি জ্বরে কাঁপছে। আজ (সোমবার) নয়াদিল্লিতে এই সফরের ইতি টানবেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক। তিন দিনের এই সফরে দর্শক-সমর্থকদের উচ্ছ্বাস বেশ ভালোভাবে টের পেয়েছেন তিনি। কিন্তু শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। কলকাতায় ভিভিআইপিদের কাড়াকাড়িতে তিনি দর্শকদের দৃষ্টিতে পড়েননি। কলকাতায় হট্টগোল, বিশৃঙ্খলায় শুরুতেই কলঙ্কিত হয়েছে মেসির ‘জিওএটি ইন্ডিয়া ট্যুর’। এবার বিজেপির সাবেক সাংসদ অর্জুন সিং অভিযোগ তুললেন, এলএমটেনকে ভারতে নিয়ে এসে ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। এনিয়ে ভারতের অর্থনৈতিক গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে (ইডি) তদন্তের দাবি জানান তিনি।
অর্জুনের দাবি, মেসিকে দেখতে না পাওয়ার হতাশা থেকেই এমন ক্ষোভ নয়, মাঠে দর্শকদের পানির বোতল ১৫০-২০০ টাকা করে কেনাও একটা কারণ। প্রায় এক ঘণ্টা মেসির মাঠে থাকার কথা থাকলেও ভিড়ের মধ্যে ২২ মিনিটেই বিদায় নেন, যাকে এই সাবেক সাংসদ ‘চুরি করা’ আখ্যা দিয়েছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস-কে অর্জুন সিং বলেন, ‘স্টেডিয়ামটা হয়ত পাঁচ টাকা, এক টাকা দিয়ে প্রতীকীভাবে বুক করা হয়েছে। কিন্তু তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আপত্তি একটা জায়গায় রয়েছে, যেখানে সাধারণ মানুষের আপত্তি ছিল, ১০ টাকার পানির বোতল বিক্রি হয়েছে ১৫০-২০০ টাকায়। মেসিকে চুরি করে নিয়ে গিয়েছে, তাতে আপত্তি রয়েছে। প্রায় ১০০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। সাধারণ মানুষ বলছে, যাদেরকে দেখা গিয়েছে মাঠে, তাদের দেখতে ১০০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। কোটি কোটি টাকা খাওয়া হয়েছে। তার জন্য দ্রুত ইডি তদন্তের প্রয়োজন। কী চুক্তি হয়েছিল, কত লাভ-লোকসান হলো, তা বলতে হবে।’
গত ১৩ ডিসেম্বর মেসির সফরের প্রথম দিনে সল্টলেক স্টেডিয়ামে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। আর্জেন্টাইন তারকা মাঠে ঢোকার সময় তাকে ঘিরে ছিলেন প্রায় ৮০ জনের মতো মানুষ। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ছাড়াও পুলিশের বড় নিরাপত্তা বলয় ছিল সেখানে। অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে মেসি থাকতে চাননি। আগেভাগে চলে যান। হাজার হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কাটা সাধারণ মানুষ মেসিকে দেখতে পাননি।
গ্যালারি থেকে বোতল ছুঁড়তে থাকেন সমর্থকরা। রেলিংয়ের গেটে তালা ভেঙে জনতা ঢুকে পড়ে মাঠে। গ্যালারি থেকে সিট ভেঙে তা মাঠে ফেলা হয়। এমনকি ভিআইপিদের জন্য মাঠের পাশে রাখা চেয়ারে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনের ভেতর রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। পুলিশ লাঠিচার্জ করে দর্শকদের মাঠ থেকে সরানোর চেষ্টা করে।
মাঠের ভেতরে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে সমর্থকদের কেউ কেউ টিকিটের পয়সা উসুল করতে বারপোস্টের জাল কেটে ‘স্মারক’ সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তারপর দেখা যায় কেউ চেয়ার নিয়ে যাচ্ছেন, তো কেউ কার্পেট কাঁধে নিয়ে যাচ্ছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে মেসির কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন।
এফএইচএম/

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.